দেশে ফের করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে নতুন করে কোনো নির্বাচনে তফসিল না দিতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর।
বুধবার একটি অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আহমেদুল কবীর বলেন, করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। সারাদেশে করোনা পরিস্থিতিও ঊর্ধ্বমুখী। আমরা নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানাই, এই মুহুূর্তে নতুন করে আর কোনো নির্বাচনে যেন তফসিল ঘোষণা করা না হয়।
বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। এ সপ্তাহে সে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ নিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে আমরা দেখেছিলাম সংক্রমণ ২ শতাংশের মতো। কিন্তু তা এখন বেড়ে প্রায় ৪ শতাংশে কাছাকাছি রয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে যে নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল, ডিসেম্বরের শেষ দিকে এসে দেখছি তা একটু একটু করে উপরের দিকে উঠছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশেও ১০ জন রোগীর শরীরে তার অস্তিত্ব মেলে। এরপর স্বাস্থ্য অধিদফতর নতুন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সব বিমানবন্দর, স্থল বন্দর, সমুদ্র বন্দরকে সতর্ক করে দেয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দর, স্থল বন্দর ও সমুদ্র বন্দর দিয়ে যারা দেশে ঢুকছেন প্রয়োজনমাফিক তাদের আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া ওমিক্রন ঠেকাতে করণীয় কী হবে সে নির্দেশনাও এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন> পীরের ফতোয়ায় ৫০ বছর ধরে ভোট দিতে পারছেন না রূপসার নারীরা
তিনি বলেন, ওমিক্রন ঠেকানোর জন্য যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা আমরা গত দেড় দুই বছর ধরে লাগাতার বলে আসছি। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি ও ব্যক্তিগত সুরক্ষাকে গুরুত্ব দেই ও তা অব্যাহত রাখি, তবে করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা আমরা অঙ্কুরেই বিনষ্ট করতে পারি।
স্বাস্থ্য বুলেটিনে নজরুল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সরবরাহ করা হয়েছে। রাজধানীতে ৪ হাজার ২৪২টি কোভিড সাধারণ শয্যার বিপরীতে এখন ৪ হাজার ২৪২টি শয্যাই খালি রয়েছে।
দেশে ৭ কোটি ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৫ কোটি ২৩ লাখের বেশি। প্রায় ৭৭ হাজার মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. নজরুল।
এছাড়াও সরকার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দিচ্ছে। এরই মধ্যে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৯১০ জন শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন বলে জানান তিনি।