বর্ধিত ভাড়া অযৌক্তিক উল্লেখ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, মালিকপক্ষের প্রেসক্রিপশনে ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার।
সোমবার সকালে নগরীর সেগুনবাগিচা শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি’র প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান। একই সঙ্গে বাড়তি বাস ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর বর্ধিত বাস ভাড়া কার্যকরের আগে এখানে কী পরিমাণ বাস গ্যাসে চলে আর তেলে চলে তার সুরাহা হওয়া দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ভাড়া নির্ধারণের ব্যয় বিশ্লেষণে পুরনো বাসকে নতুন হিসেবে দেখানো হয়েছে। চালক-হেলপারদের বেতন, বোনাস দেওয়ার মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০ বছরের পুরোনো বাসেও ব্যাংক লোন দেখানো হয়েছে। এভাবে নানা খাতে অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি দেখিয়ে একলাফে ১.৪২ পয়সার ভাড়া ১.৮০ পয়সা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করলে বড়জোর ১.৬০ পয়সা নির্ধারণ করা যেত।
গত এক দশকে প্রভাবশালী মালিকদের নিয়ন্ত্রণে আমাদের নৌপথে বেশ কয়েকটি ৩-৪ কোটি টাকা দামের লঞ্চ যাত্রীসেবার বহরে যুক্ত হয়েছে। এসব লঞ্চের ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রী বহনের সক্ষমতা রয়েছে। এ ধরনের কোটি টাকার লঞ্চ চালাতে লাখ টাকা খরচ হয়। এ লঞ্চের সংখ্যা ২০-৩০টির বেশি না হলেও ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে এসব বড় লঞ্চের খরচকে ব্যয় বিশ্লেষণে এনে ভাড়া নির্ধারণ করে দেশের লাখ লাখ নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা, ও ছোট লঞ্চ, ট্রলারের ভাড়া বৃদ্ধি করার কারণে যাত্রীর স্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সাশ্রয়ী নৌপথের ভাড়া ক্রমশ সড়ক পথের দ্বিগুণ হয়েছে। এরকম অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য ভাড়া বাতিল করে ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রীধারণ সক্ষমতার বড় লঞ্চের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং ছোট ছোট নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা ও লঞ্চ, ট্রলার যাদের যাত্রীধারণ সক্ষমতা ১৫০ থেকে ৫০০ জন, পরিচালন ব্যয় কম এসব নৌ-যানের ভাড়া ১ টাকা ২০ পয়সা করার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত নিবন্ধিত সংগঠন হিসেবে যাত্রী কল্যাণ সমিতিকে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধি হিসেবে সুযোগ দেওয়া হলে এ ধরনের অবাস্তব একচেটিয়াভাবে ভাড়া বাড়ানো যায় না। তাই বাস-লঞ্চে জনস্বার্থের ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মালিক-সরকার মিলেমিশে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আয়োজন করে। এরকম অন্যায় ও জুলুমপূর্ণভাবে বর্ধিত ভাড়া বাতিল করে যাত্রী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য, বাস্তবসম্মত ভাড়া নির্ধারণের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।