ছুটির দিন হলেও জরুরি প্রয়োজনে সকাল ৮টার মধ্যে সাব্বির আহম্মেদ আদিলকে পৌঁছাতে হবে অফিসে। তাই খুব জলদি বাসা থেকে বেরিয়েও এয়ারপোর্ট বাস স্টেশনে আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে দিশেহারা তিনি। মিলেনি বনানী যাওয়ার একটিও গণপরিবহন। উপায়ন্ত না পেয়ে ভিড় ঠেলে ১০০ টাকার বিনিময়ে গাদাগাদি করে মাইক্রোবাস চেপে ছুটলেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সারাদেশে শুক্রবার থেকে চলছে ধর্মঘট। তাই সাব্বির আহম্মেদের মতো এমন অসংখ্য মানুষকে শুক্রবার সকালে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস স্টেশনে গণপরিবহনের জন্য হাহাকার করতে দেখা গেছে।
এদিন সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, ট্রাক-বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশন এবং ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, কেউ বাড়ি যাবেন, কেউ বা চিকিৎসা করানোর মতো জরুরি কাজে সড়কে বেরিয়ে পড়েছেন। গণপরিবহন না থাকায় দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়েও নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার কোনো পরিবহনের ব্যবস্থা করতে পারেননি অনেকেই।
তাই এক ধরনের বাধ্য হয়েই চারগুণ বা পাঁচগুণের বেশি ভাড়া দিয়ে মোটরসাইকেল, সিএনজি ও মাইক্রোবাসে করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রীদের অনেককে যাত্রা করতে দেখা গেছে। আবার অনেককে পিক আপের পেছনে দাঁড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করতেও দেখা গেছে।
রাজধানীর নতুনবাজার সুভাস্তর সামনে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা রহমতউল্লাহ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। শুক্রবার সরকারি বন্ধ থাকলেও তার অফিস খোলা থাকে। তিনি অফিস করতে যাবেন, কিন্তু গণপরিবহণ নেই। এদিকে সড়কে চলমান অটোরিকশা থাকলেও চওড়া ভাড়া হাকাচ্ছেন।
তিনি জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় গণপরিবহণ বন্ধ। কিন্তু এদিকে মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তির মধ্যেও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা সুযোগ নিতে শুরু করেছে। ২০০ টাকার ভাড়া চাইছে ৭০০ টাকা। বিপদে পড়েছি। তাই রিকশা যোগে ভেঙে ভেঙে পল্টনে যাচ্ছি।
এদিকে স্ত্রীকে নিয়ে ধানমন্ডির একটি হাসপাতেল যাবেন ফাতেমি আহমেদ রুমি। তিনি সকাল থেকে বনানী বাস স্টেশনে দাঁড়িয়েও কোনো পরিবহনের ব্যবস্থা করতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে অটোরিকশায় চেপে বসলেন। তিনি জানান, বাস না থাকায় অটোরিকশা চালকদের ডিমান্ড বেড়ে গেছে। তারা অনেক বেশি ভাড়া হাকাচ্ছেন।
সকাল থেকেই রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা হাউজবিল্ডিং, জসিমউদ্দীন, বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড, খিলক্ষেত, কুড়িল, বনানী, মহাখালীসহ বিভিন্ন স্থানে যাত্রীদের ভোগান্তি দেখা গেছে।
সড়কে গণপরিবহনের চলাচল না করলেও অটোরিকশা, রিকশা ও প্রাইভেটকারের পাশাপাশি সরকারি বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেখা গেছে।