গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২০নং গোবরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরী (টুটুল) এর বিভিন্ন কুকীর্তি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে রাষ্ট্রের কাছে বিচার চেয়েছে স্ত্রী চৌধুরী অন্তু রহমান ইতি গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময় চৌধুরী অন্তু রহমান ইতি বলেন, আমাদের তিন দশকের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমার স্বামী শফিকুর রহমান চৌধুরী (টুটুল) ২০১৬ সালে ইউনিইয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদন্দিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আচরণগত পরিবর্তন শুরু হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিচয়কে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রলোভনে অসংখ্য নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে।
এ ব্যাপারে তাকে আমি নিবৃত করার চেষ্টা করলে আমাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মানসিক অত্যাচার শুরু করে। সম্প্রতি বেশ ক জন নারীর সঙ্গে তার অশ্লীল পরকীয়া ফোনালাপের অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। তার ঐ সব অশ্লীল ফোনালাপ আমি ও আমার পরিবারকে বিব্রত করেছে। ইউনিয়ন বাসী কে করেছে বিস্মিত। এর পূর্বে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোবরা ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্ৰামের বুলবুল মোল্লার মেয়ে ১১৭ নং ভাটিয়াপাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা (স্বামী পরিত্যক্তা) বনানী খানমের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ছিল।
তৎকালীন সময়ে আত্মীয় স্বজনদের প্রশ্নের মুখে ওটাকে অপপ্রচার বলে চালিয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করে ধামাচাপা দিয়ে ছিল। বর্তমান সেই ভাইরাল হওয়া মেয়েটি কে নিয়েই বিবাহ বহির্ভূত ভাবে মেলামেশা ও ঘর সংসার করছে, যা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে একটি বড়ধরনের অপরাধ।
অপর দিকে বনানীর সঙ্গে মেলামেশা ও ঘর সংসার করার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গোপালগঞ্জের এক চাকুরীজীবি মহিলা (হিন্দু ধর্মের) বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘদিন শারীরীক সম্পর্ক স্থাপন করার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরী টুটুলের স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করেছিলেন। অপর দিকে ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান পদবিকে অপব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকার চাকুরি প্রার্থীদের কাছথেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চেয়ারম্যান টুটুল।
যাদের চাকুরি দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের জামানত ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে টাল বাহানা করে তাদের ক্ষতি করেছে। সম্প্রতি তার এ সব অনৈতিক নিয়োগ ব্যানিজ্যের বিষয়ে স্থানীয় একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
এছাড়াও শুরু থেকে ইউপি পরিষদের কর্মকান্ড পরিচালনায় একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে। ঐ সিন্ডিকেটের এখন পর্যন্ত জিম্মি গোটা ইউনিয়নবাসী। চৌধুরী অন্তু রহমান ইতি আরো বলেন, মুখোশধারী এই চেয়ারম্যান স্থানীয়ভাবে সূর্য শিশির ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন করে নিজেকে মানবিক হিসেবে জাহির করলেও তিনি কোন ভাবেই মানবিক নন।
বর্তমানে তার মুখোশ খুলে দেওয়ায় আমার উপর নানা ধরনের নির্যাতন হয়েছে। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি ও দেওয়া হয়েছে। প্রাণভয়ে বাসা-বাড়ী ছেড়ে আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে আশ্রায় নিয়েছি। সামনে ইউপি নির্বাচন উক্ত নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যোগ্য, সৎ ও চারিত্রিক গুনাবলী সম্পন্ন ব্যাক্তি কে গোবরা ইউপি নির্বাচনে দলিয় মনোনয়ন দিবে বলে এলাকার সাধারণ মানুষের মত আমারও প্রত্যাশা। শফিকুর রহমান চৌধুরী টুটুলের মত মুখোশধারীর হাত থেকে গোবরা ইউনিয়নবাসী মুক্তি পেতে চায়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরীর স্ত্রী অন্তু রহমান ইতিসহ তার নিকট অত্মিয় শামিম চৌধুরী, ইমরান হাসান চৌধুরী,লিখন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিল।