দেশে করোনা টেস্টের দ্রুত ফল পেতে সম্প্রতি র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সংক্রমণ বৃদ্ধি ও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর এই টেস্ট বাড়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে গত বছরের অক্টোবরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতির পর ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই টেস্ট শুরু হয়। শুরুতে গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পটুয়াখালী, যশোর, মেহেরপুর ও সিলেটে অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখন সবচেয়ে বেশি এই পরীক্ষা করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে।
গত মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার ছিল র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা। এক সপ্তাহ আগেও এ সংখ্যা অন্তত এক হাজার কম ছিল। দেশে সব মিলিয়ে ৩৩৪টি স্থানে এখন র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এখন পর্যন্ত সর্বমোট র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে ৯৩ হাজার ৩৮০টি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর বলেন, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, সিলেটসহ দক্ষিণ-পশ্চিম ও সীমান্তবর্তী যেসব জেলাতে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। তাই এ অঞ্চলগুলোতে অ্যান্টিজেন টেস্ট বাড়ানো হয়েছে। ঢাকাতেও নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্রাকের যেসব বুথ রয়েছে সেখানে অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। রাজশাহীতে ৬ জুন পাঁচ জায়গায় অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়েও টেস্ট করানো হচ্ছে।
এখন দেশের বেশিরভাগ সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান আলমগীর।
তিনি জানান, যেসব জায়গায় সংক্রমণের হার বেশি সেখানে মূলত স্ক্রিনিংয়ের জন্য পাড়ায় পাড়ায় বা বাড়িতে গিয়ে এই পরীক্ষাটি করা হয়। এক্ষেত্রে যাদের সংক্রমণ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করার মতো কোনো উপসর্গ রয়েছে এমন কারোর নাক থেকে নমুনা নিয়ে একটা কিটে পরীক্ষা করা হয়। এতে ভাইরাস শনাক্ত হলে তাকে আর পিসিআর পরীক্ষা করার কথা বলা হয় না। কিন্তু উপসর্গ থাকার পরও যদি ভাইরাস শনাক্ত না হয় তখন অধিকতর পরীক্ষার জন্য তার নমুনা পাঠানো হয়। এই টেস্টের মাধ্যমে বিশেষ ভাইরাল অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়, যা আসলে ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
জানা গেছে, এই পরীক্ষার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল দিতে পারে। ২০ মিনিটের মধ্যে এর ফল পাওয়া যায়। দ্রুত শনাক্ত মানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়। এছাড়া খরচ খুব কম। পিসিআর টেস্টে সময় লাগে কম পক্ষে ছয় ঘণ্টা।
অন্যদিকে অ্যান্টিজেন টেস্টে তেমন কোনো ব্যবস্থা লাগে না। একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে অল্প প্রশিক্ষণ দিয়ে, আঙুলের আকৃতির একটি কিট ও দরকারি সল্যুশনসহ একটি টেবিলে থাকলেই হয়। কোনো ল্যাব দরকার হয় না। এর জন্য দরকারি কিট বহনযোগ্য।