নোয়াখালী সদর উপজেলার দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে তান্ডব চালাচ্ছে সন্ত্রাসী সুজন বাহিনী। এই বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জবরদখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ এই বাহিনীর নিত্য ঘটনা। সুজন বাহিনীর সদস্যদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায়না কেউ। এই বাহিনীর অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই নেমে আসে বর্বর নির্যাতন। স্থানীয়রা সুজন বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামের মৃত আবদুলের পুত্র ফজলুল হক সুজন নব্য একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জবর দখলসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। সুজন ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্ম করার জন্য ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। মতিপুর এলাকার জামশেদ মিয়ার সাথে সোনাপুর এলাকার কাদের হাওলাদার বাড়ির মৃত আলম মিয়া প্রকাশ আলী মিয়ার পুত্র আমান উল্যাহ প্রকাশ হাজী শাহিনের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ ছিলো। এর জের ঘরে সম্প্রতি সুজন বাহিনীর সদস্যরা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে মারাত্মক অস্ত্রস্বস্ত্র নিয়ে জামশেদ মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট করে। তারা বসত ঘরটি পর্যন্ত লুট করে নিয়ে যায়। এতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে ওই পরিবারটি। পরে তারা বসত ঘরের জায়গাটি দখল করে নেয়। তান্ডবলিলা চালানোর সময় অস্ত্রের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভূক্তভোগী জামশেদ মিয়া জানান, আমরা দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত এখানে বসবাস করে আসছি। শাহিন সুজন বাহিনীর ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের মারধর করে ভাংচুর লুটপাট চালিয়ে আমার বসত ঘরের জায়গাটি দখর করে নিয়েছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আদেবন আমাদেরকে সুজন বাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচান। অপরদিকে দাবীকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে সুজন বাহিনীর সদস্যরা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্ধা ও নোয়াখালী সরকারী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষপ্রফেসর ড. আ ফ ম রুহুল আমিনের মতিপুরের নির্মানাধীন বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় তারা বাড়ির কেয়াটেকার আকরাম উল্যাহ ও ম্যানেজার মোস্তফা কামালকে মারধর করে প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা প্রফেসর রুহুল আমিন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারকে জানালেও কোন প্রতিকার না পেয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলা করার পর সন্ত্রাসীরা প্রফেসর হুরুল আমিন ও স্বাক্ষীদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ও সন্ত্রাসী সুজনবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদিক সম্মেলন করেন প্রফেসর ড. আ ফ ম রুহুল আমিন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বিগত ২০০৫ সালে সদর উপজেলার মতিপুরের এইচ এম শামছুদ্দিনের কাছ থেকে ১৮ শতক জমি কিনে ১৬ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। গত ৮ মার্চ ফজলুল হক সুজন নামের এক ব্যক্তির প্রত্যক্ষ নির্দেশে আমান উল্যাহ শাহিন, শাহাদাত হোসেন, হারুন, পারভেজ, রিয়াজ ও আবদুল মতিন স্বপনসহ ২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নির্মানাধীন বাড়িতে গিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে তিনি ওই সময় সুধারাম থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। সর্বশেষ গত ২১ ডিসেম্বর ওই উপাধ্যক্ষ তাঁর জমিতে পূনরায় ইমারত নির্মাণ শুরু করলে আবারো ফজলুল হক সুজনের নেতৃর্ত্বে একদল সন্ত্রাসী নির্মাণাধীণ দেওয়ালের কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় তারা ওই জমিতে থাকা নির্মাণ সামগ্রী, ঘরের দরজা, জানালা ভেঙ্গে জোরপূর্বক মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয় এবং চাঁদা না দিলে তাঁকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে সরেমজিন গেলেও অভিযুক্ত ফজলুল হক সুজনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের কোন সদস্যও কথা বলতে রাজি হয়নি।