রাজশাহীর বাগমারায় জেলা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হারুনুর রশীদের চাঁদা নেয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও ভাইরালের পরই বুধবার তাকে প্রত্যাহার করেছে জেলা পুলিশ।এর আগে হারুনুর রশীদ তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি করোনাকালে লকডাউনের সময়কার। ওই সময় তাহেরপুর পৌর এলাকার একটি মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এএসআই হারুন। জলন্ত সিগারেট মুখে রেখে তিনি দোকানদারের সঙ্গে দেন-দরবারের পর দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করেন। পরে টাকা গুনে দেখে তিনি আরও এক হাজার টাকা দাবি করেন। পুরো টাকা নিয়েই তিনি ওই দোকান ত্যাগ করেন।
এদিকে এএসআই হারুনকে তাহেরপুর ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের পর তার অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।এএসআই হারুনের চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, আটকবাণিজ্য ও মাদকবাণিজ্যে তার সম্পৃক্ততাও বেরিয়ে আসছে।স্থানীয়দের অভিযোগ, লকডাউনের সময় বাগমারার সাজুড়িয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী লেদ আজাদকে হেরোইন ও ইয়াবাসহ আটক করে এএসআই হারুন মোটা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন।
রামরামা হাজরাপুকুর গ্রামের সুবদের ছেলে গাঁজা ব্যবসায়ী সনাতন দাসকে মাদকসহ আটকের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন এবং আটক গাঁজা হারুন আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।স্থানীয়রা অভিযোগে আরও জানান, তাহেরপুরের পার্শ্ববর্তী পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের ইমন নামে এক ছাত্রকে ১০টি ইয়াবা দিয়ে সাজানো মামলায় চালান করেন হারুন।
ইমনের পরিবারের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে প্রতিপক্ষ এএসআই হারুনকে টাকা দিয়ে এই কাজ করায়।ভুক্তভোগীরা বলছেন, এএসআই হারুণের মূল কাজই ছিল দোকানে দোকানে চাঁদাবাজি করা আর মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা।অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই হারুন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।এএসআইয়ের ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, বিষয়টি নজরে আসার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাহেরপুর ফাঁড়ি থেকে এএসআই হারুনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। তার বিষয়ে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।