জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বয়রাপাড়া গ্রামে ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হওয়া সেই মেয়ের বয়স ১৮ বছর। জামালপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্রিকায় ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধের সঙ্গে ১১-১২ বছরের কিশোরীর বিয়ের কথা বলা হলেও জন্ম সনদে দেখা গেছে, ওই মেয়ের বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে। এছাড়া বৃদ্ধের নাতির সঙ্গে ওই মেয়ের সম্পর্কের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে, ওই মেয়ের সম্পর্ক ছিল বৃদ্ধের সঙ্গে।
বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, জামালপুরে বৃদ্ধের সঙ্গে নাতির বিয়ের ঘটনাটি প্রেম সংক্রান্ত। আর ওই তরুণীর বয়স ১২ বছর বলে যে খবর প্রকাশ হয়েছিল সেটি সঠিক নয়। তার জন্ম সনদ অনুযায়ী বয়স ১৮ বছর বলে তদন্তে জানা গেছে। এমন সংবাদ পরিবেশনে আদালত স্থানীয় সাংবাদিকদের শতর্ক থাকতে বলেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, গত ২৪ নভেম্বর জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চরআমখাওয়া ইউনিয়নের বয়রাপাড়া গ্রামে ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের সঙ্গে ১২ বছরের এক কিশোরীর বিয়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। জামালপুরের ডিসি,এসপি ও দেওয়ানগঞ্জের ওসিকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত ২০ নভেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চরআমখাওয়া ইউনিয়নের বয়রাপাড়া গ্রামে ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের সঙ্গে ১২ বছরের এক কিশোরীর বিয়ে দিয়েছেন গ্রামের মাতব্বররা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রাম্য সালিশে ওই বৃদ্ধের নাতির অপরাধের দায়ভার দাদার ওপর চাপানো হয়েছে। গ্রাম্য সালিশে বৃদ্ধ মহির উদ্দিনকে ১০ দোররা মেরে তার সঙ্গে কিশোরীর বিয়ে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ভুক্তভোগী কিশোরী স্থানীয় একটি মাদরাসার পঞ্চম শেণির ছাত্রী। একই গ্রামের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের নাতির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বৃদ্ধের নাতির ধর্ষণে কিশোরী গর্ভধারণ করে। পরে তার গর্ভপাতও ঘটানো হয়। কিন্তু বিষয়টি ফাঁস হলে স্থানীয় মাতব্বররা সালিশ করে নাতির অপরাধের দায় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের ওপর চাপিয়ে দেন।
মহির উদ্দিনের প্রতিবেশীরা জানান, তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী মারা গেছেন। তৃতীয় বিয়ে করেছেন ২৭ বছর আগে। ওই কিশোরী তার চতুর্থ স্ত্রী। মহির উদ্দিন ৭ সন্তানের জনক। তিনি এখন ঠিকমত কথাও বলতে পারেন না, দৃষ্টিও ঝাপসা।