বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব বাঙালি মনে এক চিরন্তন ভালবাসার স্থান দখল করে আছেন। বাঙালির মনে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সঠিক ইতিহাস জানার আগ্রহ ও কৌতূহল অপরিসীম। দেশপ্রেমি বাংলাদেশি, দেশপ্রেমি প্রবাসী বাঙালি, পশ্চিম বাংলার সিরাজপ্রেমি বাঙালি, ছাত্র সমাজ, স্কুল- কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষিত জনগোষ্ঠি সবার মাঝেই এ আগ্রহের সমাবেশ লক্ষ্য করে আমি আনন্দ পেয়েছি। নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব শুধু নন। তিনি ছিলেন বীর ও সাহসী নবাব, আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানও দেশপ্রেমিক নবাব সিরাজউদ্দৌলা। নবাব সিরাজের চরিত্র, তাঁর রাজনীতি ও তাঁর বিরুদ্ধে অশুভ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ভাড়া করা ঐতিহাসিকরা যে সব ভুল রচনা লিখেছিলেন ইতিহাস আজও তা ক্ষমা করেনি। আমাদের দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগ আছে, ইতিহাসের অভিজ্ঞ অধ্যাপক আছেন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল ইতিহাসের শূন্যতা পূরণে তারা উদ্যোগী হবেন। ড.মোহাম্মদ মোহর আলী ও ড. কে এম মোহসীনসহ অন্যান্যদের কিছুটা উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু যথেষ্ট নয়। গবেষণানির্ভর, তথ্যনির্ভর, বিশ্লেষণনির্ভর, নতুন ব্যাখ্যা, নতুন পরিবেশনায় প্রকৃত ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপন করা আজ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। লাল সবুজের বীর সন্তান নবাব সিরাজউদ্দৌলার উত্তর পুরুষ সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা ও আমার এ উদ্যোগের মূলকারণ শূন্যতা তুলে ধরা যেন আমাদের ঐতিহাসিক ও অধ্যাপকগণ শূন্যতা পূরণে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আমার হাইপোর্থেসিস-নবাব সিরাজ স্বাধীনচেতা, সাহসী, চরিত্রবান ও বাংলার স্বাধীনতা রক্ষায় প্রথম শহীদ মুক্তযোদ্ধা ছিলেন। ভবিষ্যতে আমাদের ঐতিহাসিকগণ তাদের গবেষণার মাধ্যমে নবাবজাদা আব্বাসউদ্দৌলা ও আমার হাইপোর্থেসিস প্রমাণ করতে পারবেন আশা করি। সিরাজ ছিলেন একজন মহান দেশপ্রেমিক, সাহসী যোদ্ধা বিজ্ঞ রাজনীতিক ও ব্যক্তি চরিত্রে সহজ সরল ও বলিষ্ঠ নবাব। তিনি ছিলেন এ মাটিরই সন্তান। এই মাটির সাথে তিনি কোনদিন বেঈমানী করেননি। তিনি এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।