রাজবাড়ীতে এ বছর কয়েক দফা বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারনে আমন ধানের আবাদ পিছিয়ে পরলেও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এ মৌসুমে। গত বছরের তুলনায় ভালো ফলন হওয়ায় বিঘা প্রতি ধানের উৎপাদন বেড়েছে। তবে উ”চ ফলনশীল হওয়ায় হাইব্রিড ব্রি ৮৭ জাতের ধানের আবাদ বেশি করছেন এ জেলার কৃষকেরা। গত মাসের শেষ দিকে অতিবৃষ্টির কারনে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও ভালো ফলন পাওয়ায় সে ক্ষতি লাঘব হয়েছে। তবে অতি বৃষ্টির ফলে ধানের ক্ষেতে কৃষকদের সেচ দিতে হয়নি। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বলছে অতি বৃষ্টির কারনে আমন ধানের আবাদ কিছুটা পিছিয়ে পরলেও ফলন ভালো পাওয়ায় তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরেছেন। রাজবাড়ী জেলার ৫টি উপজেলাতেই সব জাতের ধানের আবাদ হয়ে থাকে। এবছরও রাজবাড়ীতে ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। এবছর ৪৭ হাজার ১শত ৫৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চাইতে এবছর ১ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ বেড়েছে। তবে অতি বৃষ্টিপাতের ফলে ধানের আবাদ দেরিতে হলেও অতিরিক্ত সেচ লাগেনি ধান চাষে। এতে তাদের খরচ বেড়েছে অনেক। বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে ধানের আবাদ পিছিয়ে পরলেও বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা খরচের চাইতে লাভবান হয়েছেন বেশি। তবে বিঘা প্রতি উ”চ ফলনশীল হওয়ায় হাইব্রিড ব্রি-৮৭ জাতের ধানের আবাদের দিকে বেশি ঝুকছেন চাষিরা। হাইব্রিড ব্রি-৮৭ ধান আবাদে অন্যান্য ধানের মতই খরচ হয়। চাষিদের এবছর বিঘা প্রতি বীজ ,সার,চাষ ও কীটনাশক সহ ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে ভালো ফলন হওয়ায় তারা বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন। গত বছর যেখানে ১৫ থেকে ১৮ মণ ধান উৎপাদন হয়েছিল এবছর সেখানে বাম্পার ফলন হওয়ায় ২০ থেকে ২৫ মণ পাওয়ার আশা করছেন। তবে কয়েকদিন আগের নিম্নচাপ ও অতিবৃষ্টিতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষেতের মধ্যে পড়ে গেলেও অধিকাংশ ধান পেকে যাওয়ায় তেমন ক্ষতি হয়নি। প্রতি বিঘা জমি থেকে অতিরিক্ত গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে খর পা”েছন প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার। ধানের আবাদে যে খরচ হ”েছ তা খর বিক্রি করে উঠে যা”েছ। পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাম্মনদিয়ার ধান চাষি , আক্তার হোসেন, ইসাহাক আলী ও ওমবার আলী বলেন, এবছর অতি বৃষ্টির কারনে ধানের আবাদ দেরিতে হলেও ধানের ফলন ভালো হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারনে তাদের অতিরিক্ত সেচও দিতে হয়নি। একারনে তাদের খরচও কম হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ায় ধান চাষে লাভবান হয়েছেন বেশি। তবে উ”চ ফলনশীল জাতের হাইব্রিড ব্রি-৮৭ জাতের ধান আবাদ করে অন্যান্য ধানের ফলনের চাইতে এর ফলন অনেক বেশি হওয়ায় তারা ব্রি-৮৭ জাতের ধান বেশি আবাদ করছেন। এদিকে বিঘা প্রতি ধানের সাথে তারা অতিরিক্ত গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার খর বিক্রি করতে পারছেন। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্ত’র উপ পরিচালক গোপাল কৃষ্ন দাস- বলেন, রাজবাড়ীতে এবছর অতি বৃষ্টির কারনে আমন ধানের আবাদ পিছিয়ে পরলেও জেলার সবখানেই বাম্পার ফলন হয়েছে। এবছর ৪৭ হাজার ১শত ৫৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার হেক্টরেরও বেশি। তবে কৃষকেরা ফলন বেশির কারনে উ”চ ফলনশীল জাতের হাইব্রিড ব্রি-৮৭ ধানের আবাদ বেশি করছেন। তবে চাষিরা যদি বেশি ফলন পেতে বিনা ৭ এর পরিবর্তে ব্রি ধান ৮৭ আবাদ করে তাহলে লাভবান বেশি হবে বলে জানান ।