পাবনায় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন, মাটির সুস্বাস্থ্য নিরূপন ও মাটি পরীক্ষান্তে সার সুপারিশের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষক সেবা দোড় গোড়ায় পৌছানোর জন্য সরকার পাবনাতে মৃত্তিকা আঞ্চলিক গবেষনাগার স্থাপন করা হয়েছে। মাটি, সার ও ফসলের কান্ড পরীক্ষার জন্য কৃষকদের কাছে অফিসটির গুরুত্ব অপরসীম। কিন্তু গত জুন’২০ থেকে অফিস ভাড়া নেয়া হলেও অফিসে কোন আসবাবপত্র নেই। এখানে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ২জন সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসারসহ ৪-৫ জন লোকবল নিয়োগ দিলেও তারা তারা অলস সময় পার করছেন। অপচয় হচ্ছে বাড়ী ভাড়া ও জনবলের বেতন।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরতলীর মহেন্দ্রপুর গ্রামে আঞ্চলিক গবেষনার একটি বাসা ভাড়া করা হয়েছে জুন’২০ থেকে। অফিসের সাইনবোর্ডও নাই। ভেতরে অফিসের একজন এসএসও ছাড়া কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। বসার কোন চেয়ার টেবিল নেই। নেই মাটি পরীক্ষার জন্য কোন মেশিনপত্র। কৃষি ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে পাবনার অবস্থান সুদৃঢ় হওয়ায় সরকার পাবনার কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক অবস্থা নিরূপনের জন্য এ আঞ্চলিক গবেষনাগার স্থাপন করা হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ মাস অফিস ভাড়া অপচয় হলেও প্রকৃত কাজের কোন নজিরই পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে কৃষক ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ ব্যাপারে মুঠো ফোনে দফতরটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মামুন আল আহসান চৌধূরীর সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, তাকে চলতি দ্বায়িত্বে পাবনা দফতরে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে তিনি এখনো যোগদান করেন নাই। অফিসের আসবাবপত্র এলেই তিনি যোগদান করবেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আঞ্চলিক ও গবেষনাগরসহ সারা দেশে ২৬টি নতুন অফিস নতুন স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি অফিসের অবস্থা পাবনার মতই। তবে পাবনা গবেষনা অফিসের ভাড়া রাজশাহী গবেষনা অফিস থেকে মেটানো হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের আঞ্চলিক অফিসের ভাড়া পাবনা অফিস থেকে মেটানো হচ্ছে। চাপাই নবাবগঞ্জ নতুন হলেও সেখানে স্থানীয়ভাবে আসবাবপত্র কেনা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তার দেশের বাড়ী চাপাইনবাবগঞ্জ হবার কারনে সেখানে এ ব্যবস্থা নিয়েছেন মৃত্তিকার মহা পরিচালক। তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে খুশি করতে এ বৈষম্য না করে প্রতিটি নতুন অফিসে চাপাইনবাবগঞ্জের ন্যয় ব্যবস্থা নেয়া যেত। তাহলে অফিস ভাড়া অপচয়ের কবল থেকে রক্ষা পেত। এসব আসবাবপত্র ঢাকার মহাপরিচালকের মাধ্যমে খরিদ করা হবে বলে জানা গেছে। এতে পরিবহন ব্যয়সহ স্থানীয়ভাবে খরিদ মূল্যের চেয়ে অনেক বেশী খরচ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।এ ব্যাপারে পাবনা জেলা কৃষকলীগের সভাপতি শহীদুর রহমান শহীদ বলেন, এ পর্যন্ত পাবনা গবেষনাগারে কোন আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন না করা দু:খ জনক। বর্তমান সরকার যেখানে ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরন করার জন্য বদ্ধ পরিকর, সেখানে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে জনগনের অর্থে বাসা ভাড়া নিয়ে অপচয় অপরাধ। এর জন্য সুষ্ঠকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের কৃষক তাদের অধিকার ও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের নীতিমালা অনুসারে দ্রুত ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরন করে অফিসের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র খরিদ ও কৃষক সেবা যথাযথভাবে প্রদানের আহ্বান জানান তিনি। জানতে চাওয়া হলে মৃত্তিকা সম্পদউন্নয়ন ইনিষ্টিটিউটের মহাপরিচালক বিধান কুমার ভান্ডার বলেন, আইবাস জটিলতার কারনে অর্থ ছাড় করতে দেরী হওয়ায় প্রয়োজনীয় মালামাল খরিদ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে কৃষি মন্ত্রনায়ল থেকে অর্থ মন্ত্রনালয়ে অর্থ ছাড়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে অফিসগুলোর আসবাবপত্র কেনা সম্ভব হবে। তবে যন্ত্রপাতির অনেক মূল্য হওয়ায় প্রকল্পের মাধ্যমে সেটা খরিদ করা হবে। কাজ চালানোর জন্য হালকা যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে।