স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাইভেট ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করেন চিকিৎসক ডাঃ হুমায়ন কবীর। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে ডিউটিরত অবস্থায় মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল গেটের উল্টো দিকে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন অথচ জেলার দুর-দুরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অসংখ্য রোগীরা পড়ছে ভোগান্তিতে। মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে ডাঃ হুমায়ন কবিরকে না পেয়ে সেন্ট্রাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ডাঃ হুমায়ন কবির সেখানে রোগী দেখছে। এদিকে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমাজেন্সি বিভাগে অবস্থানরত নার্স ও ঝাড়ুদারদের কাছে ডাঃ হুমায়নের অবস্থান জানতে চাইলে তারা জানান, হুমায়ন স্যার ওয়াশ রুমে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে ডিউটিকালীন সময় কতিপয় কিছু নার্স, সুপারভাইজার ও আয়াদের ম্যানেজ করে দিনের পর দিন প্রাইভেট ক্লিনিকে প্যাকটিস করে এই চিকিৎসক। ডাঃ হুমায়ন কবির রোগীর ভর্তির ফরম ও রোগ বৃত্তান্তের ফরমে রোগীর নাম ঠিকানা ও রোগের বর্ননা না লিখেই খালি ফরমে স্বাক্ষর করে চলে যান প্রাইভেট ক্লিনিকে। এ সময় কোন রোগী ভর্তি হতে আসলে দায়িত্বরত নার্স ও শিক্ষানবীশ ডাক্তাররা সেই ফরম পূরণ করে রোগী ভর্তি করে। দীপালি সাহা নামের এক গৃহবধু জানান, প্রায় দেড় ঘন্টা আগে আমার ৯ মাস বয়সী কোলের শিশুর চিকিৎসার জন্য এসেছি। কিন্তু ডাক্তার সাহেব নাই। ডাক্তারের কোথায় জিজ্ঞাসা করলে হাসপাতালের এক লোক বলেন, বেশী জরুরি হলে সেন্ট্রাল হাসপাতালে যান। সেখানে হুমায়ন স্যার ৬শ টাকার বিনিময়ে রোগী দেখেন। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দিশারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি হাসান শিকদার জানান, আমি একজন মুমুর্ষ শিশুকে রক্ত দেওয়ার জন্য রক্তদাতাকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। সারা দিন চেষ্ঠা করেও একজন ডাক্তার পাইনি। এক পর্যায়ে ডাঃ হুমায়নের কাছে গেলে তিনি বলেন, সেন্ট্রল হাসপাতালে যান। সরকারী ব্যবস্থাপনায় সেবা পেতে চাইলে তিনি ও তার সহযোগী দালাল চক্র নানা তালবাহানা শুরু করে। সরকারি হাসপাতালে ডিউটির সময় প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখছেন কিভাবে জানতে চাইলে কোন জবাব না দিয়ে দ্রুত মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের দিকে চলে যান ডাঃ হুমায়ন কবির। এ প্রসঙ্গে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ এরফান বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাইভেট প্র্যাকটিস আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। দোষীদের বিরুদ্ধে অতিশীগ্রই অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ আরশাদ উল্লাহ জানান, বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।