করোনার কারণে আড়ম্বরতা ছাড়াই আর মাত্র ৯ দিন পরই শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। বগুড়ায় ৬৫২ মন্ডপে দুর্গা পূজা উদযাপিত হবে। তবে এবার প্রতিমার উপকরণের দাম বৃদ্ধি, দেরিতে কাজ শুরু এবং প্রতিমার সেটের দাম কমে যাওয়ার পরও বগুড়ার মন্ডপে এবং মন্ডপের বাহিরে প্রতিমা তৈরীর কাজে ব্যস্ত কারিগররা। তাই সময় মতো প্রতিমা সরবরাহ করতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে রাত দিন কাজ করছেন বগুড়ার কারিগররা। সনাতন বিশ্বাস মতে , এবার দেবী দুর্গা দোলায় চড়ে মর্তে আগমন করবেন ও গজে (হাতি) প্রস্থান করবেন। এবার ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে উৎসব শুরু হবে। ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে দুর্গা পূজা শেষ হবে। দিন তারিখ মাথায় রেখে এবার চলছে প্রস্তুতি । বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বগুড়ার ১২ টি উপজেলায় ৬৫২টি মন্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১৪ টি কম। এরমধ্যে শুধু বগুড়া সদরে ১১৮ টি মন্ডপে পূজা উদযাপিত হবে। তবে করোনার কারণে এবার মন্ডপের সংখ্যা কমেছে। প্রতিমা তৈরীর কারিগররা জানান, করোনা ও বন্যার কারণে আগে থেকে তারা কাজে নামতে পারেননি। বগুড়া শহরের কারিগররা শহরে এবং শহরের বাহিরের ৩০ থেকে ৪০ জন কারিগর এসব মন্ডপে প্রতিমা সরবরাহ করবে। আবার কোন কোন মন্দিরেই প্রতিমা তৈরী হচ্ছে। এ কারণে প্রত্যেক কারিগরই বেশ ব্যস্ত। এজন্য অনেকেই বাড়তি শ্রমিক কাজে লাগিয়েছেন। বগুড়ার চেলোপাড়ার ‘নব বিন্দাবণ হরিবাসর মন্দির প্রাঙ্গনের বিশ্বকর্মা প্রতিমা কারখানা’ উত্তর চেলোপাড়ার ‘লক্ষ্মী প্রতিমা হাউজ’ ও ‘দত্তবাড়ী দেব সেবা ট্রাস্টি বোর্ড মন্দির’ প্রাঙ্গনের প্রতিমা তৈরীর কর্মযজ্ঞ ঘুরে দেখা গেছে, শিল্পীরা এখনো ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাদা মাটির প্রলেপ লাগাতে। তারা সবাই জানান, প্রতি বছর অর্ডার পেয়ে আগে থেকেই প্রতিমা কাজ শুরু করলেও এবার করোনা ও বন্যার কারণে তারা দেরিতে প্রতিমা গড়ার কাজে হাত দিয়েছেন। সময় কম বিধায় প্রতিমাতে গড়ন আসার পর রোদে শুকিয়ে ৪/৫ দিন আগে প্রতিমার গায়ে রং-তুলির আচঁড় পরবে বলে জানান শিল্পীরা। বগুড়ার উত্তর চেলোপাড়ার লক্ষ্মী প্রতিমা হাউজের স্বত্তাধিকারী শ্রী গণেশ চন্দ্র সরকার এবার বগুড়া ও বাহিরের ৮ টি প্রতিমা বানানোর অর্ডার পেয়েছেন। তিনিও এখনো মাটির কাজ করছেন। জানালেন, এবার করোনার কারণে তাদের সারা বছরের আয়ের পথ ম্লান হয়ে গেছে। প্রতিমা সেটের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু অন্য দিকে বেড়েছে প্রতিমা তৈরীর উপকণের দাম। ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য লাভ ছাড়াই অনেক ক্ষেত্রে প্রতিমা সরবরাহ করতে হচ্ছে। সাজ-সজ্জা এবং কাজের উপর ভিত্তি করে তার বানানো প্রতিটি প্রতিমার দাম পড়বে ১০ থেকে ৩৮ হাজার টাকা। তিনি আরো জানান, পূজা শুরুর ৪ দিন আগে রঙের কাজ শেষ করে তারপর সরবরাহ করা হবে।