নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ভাগনী-খালাকে অপহনের পর ধর্ষণ ও যোনাঙ্গে গরম লোহার রড় দিয়ে চ্যাকা দিয়ে নির্যাতনের ঘটনার বিচার বানচালের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। ন্যায় বিচার চেয়ে ভিকটিমরা প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপ্রতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। জানা গেছে, উপজেলার লক্ষীনারায়নপুর গ্রামে এ.এম.অটো রাইস মিলের শ্রমিক নুর জাহানকে কর্মস্থলের পার্শের রাস্তা থেকে বিগত ২০১৮ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে রসুলপুর এলাকার আবদুল ছাত্তারের পুত্র ইয়াবা সম্রাট সোহাগ, হাবিব উল্যাহর পুত্র নুর নবী, মৃত আবদুর রহমানের পুত্র আবদুল ওদুদ আলমগীরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সিএনজি যোগে জোর পূর্বক উঠিয়ে নুর নবীর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তারা নুর জাহানকে গণধর্ষণ করে। একই দিন বিকালে নুর জাহানের খালা সেলিনা, সেলিনার মেয়ে শিমা(৮) ও নুর জাহানের মেয়ে রহিমাকে(১১) উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা একই কায়দায় অপরহন করে নুর নবীর বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় তারা নুর জাহানকে গণধর্ষনের পাশাপাশি খালা সেলিনাকে বিবস্ত্র করে মোবাইলে ছবি ধারণ করে এবং যোনাঙ্গে গরম লোহার রডের চ্যাকা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। একই সময় সন্ত্রাসীরা ৮ বছরের শিশু শিমা ১১ বছরের শিশু রহিমাকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। নুর নবীর বাড়িতে মধ্যযুগীয় কায়দায় এই নারী নির্যাতনের ঘটনা এলাকাবাসী টের পেয়ে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিয়ে পুলিশ রাতে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ সময় অপহরণকারীরা পালিয়ে যায। এ ঘটনায় নির্যাতিত সেলিনা বাদী হয়ে সোহাগ, নুর নবী, নুর নবীর স্ত্রী নার্গিস আক্তার সখিনা ও আলমগীরকে আসামী করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও পর্ণোগ্রাপী নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে। যাহার নম্বর-২৬/৪৫৮, তারিখ-২৬/০৯/২০১৮ইং। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার আই.ও আসাদুজ্জামান আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জসীট দাখিল করেন। নোয়াখালী জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এ মামলা নাম্বার ৩৯৮/২০১৯ইং নাম্বারে চলমান। আদালত সকল বিবাদীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন ও স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য্য করেন। মামলার এক নং আসামী বর্তমানে পালাতক রয়েছে, বাকীরা জামিনে রয়েছে। একই সময় আসামীরা একটি প্রভাবশালী মহলের ছাত্রছায়ায় চাঞ্চল্যকর ভাগনী-খালাকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার বিচার বানচালের চেষ্টা করছে বলে বাদীনি অভিযোগ করেছেন। আসামীরা প্রচার করছে তারা হাইকোর্টে উক্ত মামলার চার্জ স্থগিতের জন্য আবেদন করে। যার নাম্বার -৫০৮১/২০২০ তারিখ-০৪/১০/২০২০ইং। একই সাথে তারা আদালতে বাংলাদেশ সুপিম কোর্টের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমানের ল-ইয়ার সার্টিফিকেট দাখিল করে। এতে চাঞ্চল্যকার এই মালমলাটির ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলাটির স্থগিতআদেশ মঞ্জুর হলে নারী ধর্ষণ ও মধ্যযুগিয়ে কায়দায় নারী নির্যাতনের ঘটনার ভূক্তভোগীরা ন্যয়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। মামলার বাদী সেলিনা অভিযোগ করে বলেন, আমরা নিরীহ দিন মজুর, আমাদের হাইকোর্টে যাওয়া সম্ভব হবে না। রসুলপুর গ্রামের মৃত এমরান মিয়া ছেলে প্রভাবশালী কামাল হোসেন কর্মচারী নুর নবী। তাই নুর নবীসহ অন্য আসামীদের সাজা থেকে বাঁচাতে তিনি তৎপর। যত কিছুর বিনিময়ে প্রভাবশালী এই মহলটি উক্ত মামলার স্থগিতাদের আনতে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এমতাবস্থায় ন্যায় বিচার পেতে নির্যাতিত সেলিনা ও নুর জাহান প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, এটনি জেনারেলসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।