চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন ¯’গিত হয়ে যাওয়ার আগে প্রচারচারনায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছিল নগর যুবলীগের নেতারা। এমনকি একত্রে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচী হাতে নিয়েছিল তারা। কিš‘ গত ২৮ সেপ্টেম্বর দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে পালন কর্মসূচী পৃথকভাবে পালন করায় আবারও অনৈক্য সামনে এসেছে নগর যুবলীগে। এ নিয়ে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। যার প্রভাব পড়ছে দলীয় রাজনীতিতে। নেতাকর্মীরা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে কমিটির দায়িত্বে থাকার পর নেতারা এখন যুবলীগ নিয়ে ভাবেন কম। আগামীতে আওয়ামী লীগের পদ ভাঙানোর মিশনে আছেন। সবাই মূল সংগঠনের পদ পেতে ভেতরে ভেতরে তদবির করেছেন। যে কারণে নিজেদের সংগঠনের কর্মসূচী পালন করছেন দায়সারাভাবে। নগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটি বিগত ২০১৩ সালে তিন মাসের জন্য দায়িত্ব নিয়ে সাত বছরে মাত্র ৫টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে পেরেছে। এ কমিটিগুলো যে প্রক্রিয়ায় হওয়ার নিয়ম সেভাবে হয়নি। এছাড়াও কখনো ঐক্য আবার কখনো অনৈক্যেই কাটছে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের দিনকাল। নগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দিন বা”চু জানান, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন অনুষ্ঠান পৃথকভাবে পালন করলেও আমার সাথে কারোরই বিরোধ নেই। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি গঠনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ওয়ার্ড কমিটি গঠন থেকে বর্তমানে বিরত আছি। আওয়ামী লীগের যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ করেছি, যুবলীগ করেছি,এখনতো আওয়ামী লীগ করবো। এটা সকল রাজনৈতিক কর্মীর উদ্দেশ্যে। আমি সেভাবেই এগুচ্ছি। নগর যুবলীগের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। যা অর্জন, তা সম্মিলিতভাবেই করেছি। ইদানিং সাংগঠনিক নিয়মনীতি না মানার প্রবনতা দেখা যা”েছ। এজন্য একটু ভুল বোঝাবোঝি হ”েছ। যে কারণে সবাই আলদা কর্মসূচী করছে। তবে সবাই বসে বিষয়টি ঠিক করে নেবো। নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদ বলেন, সাংগঠনিক নিয়ম নীতি ও গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত ব্যক্তিগত ই”ছার প্রতিফলন করতে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একজন নেতার আদর্শ, সততা, ব্যক্তিত্ব বজায় রেখে এসব মেনে নিয়ে কাজ করাটা অসম্ভব। পুনরায় কাজ করার পরিবেশ ফিরে এলে একযোগে কাজ করা যায় কিনা বিবেচনা করবো। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগে মহিউদ্দিন বা”চু-কে আহবায়ক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে ¯’ান পাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশই মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। এ নিয়ে মহিউদ্দিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত অংশগুলো তাদের বিরুদ্ধে অব¯’া নিয়েছিল। দায়িত্ব নিয়েই ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড কমিটির মধ্যে ৫টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করেছেন নেতারা। গত বছরের আগষ্ট মাসে এ কমিটি ভেঙ্গে দেয়ায় তোড়জোড় শুরু হয়। সংগঠনের তৎকালীন চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম যুবলীগ নেতাদের ডেকে অক্টোবরের মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন। কিš‘ তারা পদক্ষেপ না নেয়ায় নতুন কমিটি গঠনের জন্য যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন চৌধুরী বা”চুকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয় কেন্দ্র। সম্মেলনের প্র¯‘তির অংশ হিসেবে সংসদ সদস্যদের মতামত নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তালিকা প্র¯‘তির নির্দেশনা দেন কেন্দ্র। গত ২ মার্চ চট্টগ্রামের যুবলীগের প্রতিনিধি সভায় আসলে নতুন করে সংগঠনের গতি ফেরাতে উদ্যোগের কথা বলেন কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক। চসিক নির্বাচনের পরেই কমিটি গঠনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলেও সেদিন কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছিলেন। কিš‘ করোনা মহামারির কারণে চসিক নির্বাচন আটকে গেলে সেই কমিটি আর করা হয়নি। সেদিনের প্রতিনিধি সভায় নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা সাংগঠনিক তথ্য তুলে ধরে বলেছিলেন, নগরীর ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে কমিটি আছে। সভায় বক্তব্যকালে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম খান নিখিল বলেছিলেন, নগর যুবলীগের সম্মেলন অবশ্যই করতে হবে। এ কমিটি দীর্ঘদিনের। দীর্ঘদিন ধরে একটি আহবায়ক কমিটি চলতে পারে না। চট্টগ্রাম মহানগরের তৃনমূল পর্যায়ে যুবলীগ কর্মীদের দাবি, আওয়ামীলীগের দুর্দিনে রাজপথে থাকা একজন সৎ ও যোগ্য কর্মীবান্ধব নেতা আমরা চাই। আগামী নগর কমিটির সভাপতি হবে নতুন মুখ। যিনি অতীতেও বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগের বিনিময়ে রাজপথে থাকার পাশাপাশি দেশের করোনাকালীন সময়ে নগরজুড়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করে গিয়েছেন।