সাতক্ষীরা দেবহাটার উপজেলার গৌরবগাথা এক প্রতিবন্ধী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের এক উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের সহযোগীতায় এখন আর্থিকভাবে সচ্ছল ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে। বাক প্রতিবন্ধী ঐ কিশোর ছেলেটি বর্তমানে কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সবজি চাষ, মৎস্য চাষসহ বিভিন্ন কাজে আত্মনির্ভরশীল। ঐ বাক প্রতিবন্ধী ছেলেটির নাম মেহেদী হাসান। মেহেদী সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ঘরঘলিয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। দেবহাটা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মদ জানান, তিনি দেবহাটা উপজেলার কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার ব্লক টাউনশ্রীপুর ও ঘলঘলিয়া এলাকায় কাজ করাকালীন সময়ে মেহেদীর পিতা আবুল কাশেম তার সদস্য হিসেবে কাজ করতো। সে সময় প্রায় কয়েক মাস আগে তিনি (মোস্তাক আহম্মদ) মেহেদীকে দেখেন। বাক প্রতিবন্ধী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী মেহেদীকে দেখে তিনি আবেগ আপ্লুত হন। মেহেদীর পিতার কাছ থেকে মেহেদীর গল্প শুনে তিনি মেহেদীকে উৎসাহ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শওকত ওসমানের সাথে কথা বলে তাদের অনুমতি সাপেক্ষে মেহেদীকে কৃষি বিভাগের কয়েকটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করান। প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সবজি বীজ, সারসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন। মোস্তাক আহম্মদ মেহেদীকে নিজে ঐ সকল বীজগুলো সংরক্ষণ ও ফসল ফলাতে হাতে কলামে কাজ শেখান। এ ছাড়া মেহেদীর একটি গরু আছে, গরুটি বর্তমানে দুধ দিচ্ছে এবং মেহেদীর একটি ছোট ঘের থেকে মৎস্য বিক্রি করে এখন মেহেদী স্বাবলম্বী। মেহেদী প্রতিবন্ধী ক্যাটাগরি ১০০% বাক প্রতিবন্দী ও ৪০% শারীরিক প্রতিবন্ধী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন দেবহাটা একটি গৌরবগাথা ও ঐতিহ্যবাহী উপজেলা হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এই ঐতিহ্যবাহী উপজেলার প্রতিবন্ধী মেহেদীও একটি গৌরব। তিনি মেহেদীর থেকে শিক্ষা নিয়ে সকলকে এই ধরনের কাজ করতে আহবান জানান। উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সবুজ এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি মেহেদীর কাজগুলো দেখেছেন। মেহেদী বর্তমানে আত্মনির্ভরশীল, তবে এই মানবিক কাজগুলো যেন অব্যাহত থাকে সে জন্য তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।