পাবনার বেড়া উপজেলায় প্রভাবশালীদের দখলে থাকা একটি জলাশয়কে দখলমুক্ত করে অভয়াশ্রম ও অপর আরেকটিকে জলাশয়কে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেছেন ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী। গতকাল বিকেলে বেড়া উপজেলার চাকলা ও কৈটলা ইউনিয়নের শেষাংশে অবস্থিত ‘পীতম্বর জলা’ নামের জলাশয়টি অভয়াশ্রম ঘোষণা ও বড় জলা নামের জলাশয়টিকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আনাম সিদ্দিকী। এ সময় ‘পীতম্বর জলা’ জলাশয়টি দখলমুক্ত করার কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে চাকলা ইউনিয়নের তাঁরাপুর সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোমের শেখকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এলাকাবাসী জানান, ওই জলাশয়টি মূলত কাগেশ^রী নদী ও বেড়া উপজেলার কয়েকটি বিলের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি সরকারি খাল। যেটি কাশ্বেরী নদীতে এসে মিলেছে। দুটি অংশে বিভক্ত জলাশয়টির মোট আয়তন প্রায় ৬৫ একর। এর মধ্যে ২.৮ একর আয়তনের একটিকে মৎস্য অভয়াশ্রম করা হয়েছে। জানা যায়, ২০১২ সালের পর থেকে এ জলাশয়টি কাউকেই ইজারা দেওয়া হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও মৎস্য সম্পদে ভরপুর থাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা জলা দুইটি দখলে রেখেছিল। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম এলেই এর দখল নিয়ে প্রভাবশালীদের মধ্যে প্রতি বছর শুরু হয়ে যায় মারাত্মক উত্তেজনা। এর আগে বেশ কয়েকবার জলাশয়ের দখলকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে গেছে। স্থানীয় মৎস্যজীবীসহ সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জলাশয়টি প্রভাবশালীদের দখলমুক্ত করে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, এবার বর্ষা আসার পর জলাশয়ের দখল নিয়ে চাকলা ইউনিয়নের তাঁরপুর আওয়ামী লীগ নেতা সোমের শেখের লোকজনের সঙ্গে কৈটলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেবের লোকজনের চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এমনকি কিছুদিন আগে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘জলাশয়টি প্রভাবশালী কয়েকটি পক্ষ দখল করে রেখেছিল। বার বার নির্দেশের পরেও তারা দখল না ছাড়ায় অভিযান চালিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষ যাতে জলাশয় থেকে উপকৃত হয় সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি থাকবে।