আবারও গত কয়েক দিন থেকে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে বাড়ছে আত্রাই নদীর পানি। এতে উপজেলার জনগণের মাঝে আবারও বন্যাতঙ্ক দেখা দিয়েছে। টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় বন্যার পানির সঙ্গে যুদ্ধের পর উপজেলার প্রান্তিক কৃষকেরা চাষাবাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও আবারও বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আত্রাই নদীর পানি কখনও কমছে, ফের কখনও বাড়ছে। পানির এই হ্রাস-বৃদ্ধিতে নদীর অরক্ষিত তীরে ভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে। এ ছাড়া নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যার আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে। বন্যায় ফসল হারানো কৃষক আবার নতুন ফসল লাগানোর প্রস্তুতি নিলেও তারা এখন আতঙ্কে আছে। বেশ কয়েক দিন ধরে নদীর পানি বাড়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ফের বন্যার কোনো সতর্কবার্তা দেয়নি বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এ কারণে এবারও সেপ্টেম্বরে বন্যার আশঙ্কায় অনেক কৃষক শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু করতে দ্বিধায় ভুগছেন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বন্যায় এখনো বিধ্বস্ত বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো। ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি মেরামত করতে পারেননি নিম্ন আয়ের মানুষ রাস্তাঘাট ভেঙে চৌচির। সড়কে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। ব্রিজ-কালভার্টের সংযোগ সড়ক পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় অনেক এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি নামলেও শুরু হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কাজ। দীর্ঘদিনের বন্যায় অনেক পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এতে নদীতে পানি বাড়তে দেখলেই আতঙ্ক জেঁকে বসছে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে মনিয়ারী, ভোঁপাড়া ও শাহাগোলা ইউনিয়নে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে আমন চাষ করা হয়। গত বছর আমন চাষের মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চিনি আতপ ধানের চাষ হয়েছিল। এতে করে কৃষকরা ব্যাপক লাভবানও হয়েছিল। এবারে আগাম বন্যার পানি মাঠে চলে আসায় আমনচাষ ব্যাহত হতে পারে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, হঠাৎ করে আবারও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি কিছুটা কমলে মাঠের পানিও কমে যাবে। আমরা আশা করছি মাঠে পানি নেমে গেলে কৃষকরা পুরোদমে আমনচাষ করতে পারবে।