শেরপুর-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪ লেনের আদলে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়েছে। এতে শেরপুর-কুড়িগ্রাম-জামালপুর ও ময়মনসিংহের ফুলপুর, তারাকান্দা-হালুয়াঘাট অংশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও একধাপ উন্নতির পাশাপাশি খুলে যাবে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। জানা যায়, শেরপুর-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সরু অবস্থায় রয়েছে। এ সরু সড়ক দিয়ে শেরপুর-কুড়িগ্রাম-জামালপুর ও ময়মনসিংহের ফুলপুর, তারাকান্দাসহ হালুয়াঘাটের একাংশের মানুষের যাতায়াত। জেলায় রেল লাইন নেই বলে কৃষি সমৃদ্ধ ও খাদ্যউদ্বৃত্ত এ অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্য এ সড়ক দিয়েই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা হয়। সড়ক সরু হওয়াতে যানজট ও ধীরে ধীরে গাড়িগুলো চলাচল করতে হয় বলে সময়ও লাগে বেশি। আর দুর্ঘটনাতো লেগেই থাকে। বর্তমানে এ সড়কের প্রস্থ রয়েছে ১৮ মিটার। তবে বুধবার থেকে সড়কের প্রস্থ দ্বিগুণ করতে অর্থাৎ ৩৮ মিটার প্রস্থ করতে কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ সড়কটির প্রস্থ দ্বিগুণ করতে সময় লাগবে দেড়-দুই বছর। অন্যদিকে শেরপুরÑময়মনসিংহ সড়কের প্রস্থ দ্বিগুণ হয়ে গেলে এ অঞ্চলের যোগাযোগে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ওই ৬৯ কিলোমিটার রাস্তা করতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৮শ কোটি টাকা। শহরের থানা মোড় থেকে শেরপুরের সড়ক বিভাগ নকলা উপজেলার (শেরপুর অংশ) সীমান্ত বাঁশাটী পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়ক করতে খরচ হবে প্রায় ৩শ কোটি টাকা। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগ বাঁশাটী ফুলপুর থেকে ময়মনসিংহের চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী ব্রিজ পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার সড়ক করতে খরচ হবে বাকী প্রায় ৫শ কোটি টাকা। শেরপুর ও ময়মনসিংহ-এ দু’অংশের কাজ এক সাথে শুরু ও দ্রুত শেষ করতে সরকারের সড়ক বিভাগ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। গাড়ি চালকরা জানিয়েছেন, এ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নির্মাণ শেষ হলেই শেরপুর-ময়মনসিংহে আসা-যাওয়ায় সময় লাগবে বড়জোড় ২ ঘন্টা। বর্তমানে ৬৯ কিলোমিটার রাস্তায় আসা-যাওয়ায় সময় লাগে অন্ততঃপক্ষে ৫ ঘন্টা। একদিকে সময় কম লাগবে, আবার গাড়ি ভাড়াও কমে যাবে। কমবে পণ্য আনা-নেওয়ার খরচ। শনিবার নকলা উপজেলার বাঁশাটী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তরফ থেকে এস্কেভেটর দিয়ে প্রথমত রাস্তার একপাশের খোড়াখুড়ির কাজ চলছে। সেখানে কথা হয় কাজের (একাংশ) ঠিকাদার মাসুদ রানার সাথে। তিনি জানান, কাজ শুরু হয়ে গেছে। কোন বাঁধা-বিপত্তি না থাকলে সরকার নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। শেরপুর সড়ক ও জনপথের নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরিফুল আলম জানান, ওই সড়কের কাক্সিক্ষত কাজ শুরু হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বস্তির খবর। তাই সরকারের বিশাল উন্নয়নের অংশ হিসেবে এ কাজটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে করা হবে। শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান বলেন, সড়কটি প্রশস্তকরণের জন্য এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনে দাবি ছিল। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে জনগনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।