নীরবে নিভৃতে চলে গেল মরমী সাধক, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১১ তম মৃত্যুবাষিকী। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই মরমী কবি। হাওরাঞ্চলের গণশিল্পী বাউল সম্রাটের স্বরণে এ বছর তাঁর গ্রামের বাড়ি সুুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজালধলে হয়নি কোন ধরনের স্বরণ সভা বা অনুষ্ঠানের আয়োজন। “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম” ‘বন্দে মায়া লাগাইছে’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি’, ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’, ‘তুমি মানুষ আমিও মানুষ’, ‘প্রাণে সহে না দুঃখ বলব কারে’, ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইল’, ‘ওরে ভব সাগরের নাইয়া’ সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সুরকার শাহ আব্দুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ইব্রাহীম আলী ও মা নাইওরজান। পরবর্তীতে ১৯৫৭ সালে তিনি ধলআশ্রমের পাশের গ্রামে স্বপরিবারে স্থানান্তরিত হন। দারিদ্রতার সঙ্গে বেড়ে উঠা শাহ আব্দুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। ছেলে বেলায় দারিদ্রতার কারনে তিনি গ্রামের মোড়লের গরু চড়ানোর কাজ করতেন আর মাঠে মনের সুখে গান ধরতেন। তবে গানের জগতে তার সাফল্যতার প্রেরণা বাউল সম্রাটের স্ত্রী, যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ, প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সব অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে। সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠা শাহ আব্দুল করিমের গান শুরুতেই ভাটি অঞ্চলে জনপ্রিয় হলেও শহরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পায় তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কৃষিকাজ করতে বাধ্য হলেও কোনো কিছুই তাকে গান রচনা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।