অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে আছে প্রতিবন্ধি তিন সন্তানের চিকিৎসা। ৭ সদস্যের সংসার আর প্রতিবন্ধি তিন সন্তানের চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে দূর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন হত-দরিদ্র রিক্সা চালক শহিদুল ইসলাম। ২০ বছর আগে তিস্তা নদীর করালগ্রাসে ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয় হয় বাঁধ রাস্তায়। বাঁধে আশ্রয় নিয়ে দিনাতিপাত করলেও ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা। সবমিলিয়ে অন্ধকার ভবিষ্যৎ এই অসহায় পরিবারটির। দিনমজুর বাবার সাথে কাজ করে কোন রকমে সংসার চলছিল শহিদুলের। এরই মধ্যে প্রথম সন্তান মোরশেদুল ইসলাম (১৫)এর জন্ম হয়। জন্মের দেড় বছরের মাথায় মোরশেদুল হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে পরবর্তীতে সে শারীরিক ক্ষমতা ও বাক শক্তি হারিয়ে ফেলে। এর ৩ বছর পর জন্ম নেয় দ্বিতীয় সন্তান মামুন হাসান (১২)। সুস্থ্য সবলভাবে জন্ম নিলেও ২ বছরের মাথায় হঠাৎ অসুস্থ্য হলে সেও শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধি হন। এরই মধ্যে দেড় বছর আগে জন্ম নেয়া তৃতীয় সন্তান মাহিম বাবুও জন্মের কয়েক মাস পরেই শারীরিক ক্ষমতা ও বাক শক্তি হারিয়ে ফেলে। প্রতিদিনের দিনমজুরীর অর্থ আর ধার-দেনায় টাকায় প্রতিবন্ধি তিন সন্তানের চিকিৎসা করাতে হিমশিম খাচ্ছেন রিক্সা চালক শহিদুল ইসলাম। দীর্ঘসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা করেও কোন লাভ হয়নি। তিন সন্তানকে সুস্থ্য করতে নিরন্তর ছুটেছেন এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে। শহিদুলের উপার্জনে ৩ প্রতিবন্ধি সন্তানের চিকিৎসা খরচ আর বৃদ্ধ বাবা-মা নিয়ে ৭ সদস্যের সংসার যেন আর চলছে না। বাধ্য হয়েই বৃদ্ধ পিতা আবু তাহের(৭৫) ছেলের সংসারের ব্যয় মেটাতে দিনমজুরীর কাজ শুরু করেছেন। শহিদুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম আর বৃদ্ধ মা ফাতেমা বেগম প্রতিবন্ধি ছেলেদের দেখাশুনা করেন। দুই সন্তানের প্রতিবন্ধি ভাতা আর বৃদ্ধ বাবার বয়স্ক ভাতার টাকায় কিছুটা সংসারের আর্থিক সহযোগিতা হলেও এই পরিবারটির ভাগ্যে জোটেনি গৃহহীনদের জন্য সরকারের দেয়া ঘর।