বগুড়ার শেরপুরের দোয়ালসাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে বিধিমালা লঙ্ঘন, ক্ষমতার অপব্যবহার, রেজুলেশনে প্রিজাইটিং অফিসারের স্বাক্ষর না থাকায় এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে আবেদন দেয় প্রধান শিক্ষক।
অপরদিকে শিক্ষাবোর্ডের অপর এক চিঠিতে উল্লেখিত অবৈধভাবে সভাপতি নির্বাচন এবং স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় সরেজমিন তদন্তের জন্য বগুড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) কে চিঠি দেন। এর প্রেক্ষিতে দ্রুত তদন্তের দাবী জানিয়ে এবং শিক্ষাবোর্ডের অনিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার দুপুরে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন ম্যানেজিং কমিটির ৭জন সদস্য।
সম্মেলনে ম্যানেজিং কমিটির পক্ষে অভিভাবক সদস্য গোলাম সরোয়ার লিখিত বক্তব্যে বলেন, শেরপুর উপজেলার দোয়ালসাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ আলী যোগদান করেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে মনোনয়নের জন্য শিক্ষাবোর্ড ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তাসহ সংশ্লিস্টদের কাছে সভাপতি পদ পুনঃগঠনের লক্ষে একটি চিঠি দেন। ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে কোন মিটিং না করে সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে এবং প্রিজাইটিং অফিসারের স্বাক্ষর বিহীন নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করে করেছেন। গত ৯ আগষ্ট প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া রেজুলেশন দিয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর বিধিমালা লঙ্ঘন ও প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর উপেক্ষিত রেজুলেশনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই আবেদন করেন। এরফলে ১০ আগস্ট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের আদেশক্রমে বিদ্যালয় পরিদর্শক ১০ আগস্ট স্মারকে ৩/এস/৪৭/৫৭৯ সহিদুজ্জামানকে ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত সভাপতি পদে নিয়োগ দেন।
ম্যানেজিং কমিটির মিটিংহীন এবং প্রিজাইডিং অফিসার (উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা) স্বাক্ষর বিহীন ও সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন করায় ১০ আগস্ট ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ৭জন সদস্য শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ৩/এস/৪৭/৫৭৮নং স্মারকে সভাপতি পদে অনিময়ের অভিযোগ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বগুড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)কে অনুরোধ করে একইদিনে আরেকটি চিঠি দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অবৈধভাবে সভাপতি নিযুক্তকরণ ও তার নানা অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে দ্রুত সুষ্ঠ তদন্তের জন্য দাবী জানান। এসময় বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মো. গোলাম সরোয়ার, মো. মজনু মিয়া, সূর্য চন্দ্র প্রাং, মো. মজনু আকন্দ, মোছাঃ ফেন্সি বেগম, এস এম আবু সুফিয়ান- শিক্ষক প্রতিনিধি ও মো. রুস্তম আলী- বিদ্যুৎসাহী সদস্যসহ প্রমুখ গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজমুল হক বলেন, উপজেলার দোয়ালসাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শুন্য সভাপতি নির্বাচন সংক্রান্ত একটি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছে। তবে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে কোন মিটিং সভা প্রিজাইটিং কর্মকর্তা এবং আমার স্বাক্ষরিত রেজুলেশন হয়নি। এক্ষেত্রে ওই প্রধান শিক্ষক কিভাবে মিটিং করেছে এবং তাতে অদ্যবধি কোন স্বাক্ষর বা সিল মোহর দেয়া হয়নি বলে দাবী করেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তা।