টানা চার দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা পেরিয়ে গেছে। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও বীজতলাসহ আমন ধান ক্ষেত। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে এবছর চতুর্থ বারের মত পানি বাড়লো। পাউবো সূত্র জানায়, রোববার দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় থেকে নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেঃমিঃ উপড় প্রবাহিত হচ্ছে। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬টার তথ্যমতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার লক্ষীটারী, কোলকোন্দ, গজঘন্টা, মর্ণেয়া ও নোহালী ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলের হাজার পরিবার। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সেই সঙ্গে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল। উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর বিনবিনা এলাকার বাসিন্দা সাইদুল মিয়া বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে পানি বাড়া শুরু হইছে, আজ (রবিবার) দুপুর থেকে আরো বেশি পানি বাড়েচোল। কয়দিন থাকি বৃষ্টি আবার ফির নদীর পানি বাড়লো। আরো পানি বাড়ার আগে উচাত যেয়া থাকি। উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি গ্রামের মতিন মিয়া বলেন, যেভাবে পানি বাড়েচোল তাই হামরা আগাম উচাত (উঁচু স্থান) আসছি। খালি পানি বাড়ে আর হামার এই কষ্ট। বাড়ির সামনে যে শাক-সবজি লাগাছলাম সব তলে গেলো। উপজেলার সদর ইউনিয়নের গান্নাড়পার এলাকার বাসিন্দা মমিন বলেন, ৩ দোনের (৩০ শতকে ১ দোন) মাটিত (জমিত) আাগাম ধান লাগাচুং। ধানত পাক আসবার ধরছে তাতে গেলো তলে। এ পানি যে এলা কয়দিনে কমে। পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) আহসান হাবিব বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে ১৮ ঘন্টার মধ্যে পানি কমে যাবে।