ফরিদপুর ল্যাব এইডের ম্যানেজার মেহেদী হাসান ও ক্লিনার সুমি আক্তারের অধৈধ সম্পর্কের বিষয় বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে পড়ার পর ক্লিনার সুমি আক্তারকে চাকরিচুত্য করে স্বপদে বহাল রয়েছেন ল্যাব এইডের ম্যানেজার মেহেদী হাসান। এদিকে চাকরিচুত্য ক্লিনার সুমি আক্তারকে বলির পাঠা বানিয়ে ম্যানেজার মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সাধারন কর্মকর্তা কর্মচারিদের মাঝে। এ নিয়ে গত ১৩ ই আগস্ট ল্যাব এইড ফরিদপুর শাখার বিক্ষুব্দ কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি দরখাস্ত ঢাকার ল্যাব এইড এর হেড ব্রাঞ্চে প্রদান করেন, যার একটি অনুলিপি সাংবাদিক মহলেও প্রেরন করা হয়। এ ছাড়াও সহকারি ম্যনেজার সোহাগও ঘটনাটিকে পুজি করে তার ইচ্ছেমত অফিস করার বিষয়টিও অভিযোগ পত্রে তুরে ধরা হয়। যদিও অভিযুক্ত ম্যানেজার মেহেদী হাসান ঘটনার আংশিক সত্যতা স্বীকার করে এমন ধরনের আচরন আর হবে না মর্মে অডিট কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। আর ঢাকা ল্যাব এইডের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত চলছে বলে এ প্রতিবদকে জানান। এ নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, মেহেদী হাসান তাহার বাসায় কর্মরত বুয়াকে ল্যাব এইড এ ক্লিনার পদে চাকুরী দেন এবং তাহার সহিত দীর্ঘপ্রনয়ে জরিয়ে পড়েন। ঘটনা ম্যানেজার এর বেডরুম থেকে অফিস কক্ষে পর্যন্ত গড়ায় এবং তাহাদের বিভিন্ন অন্তরঙ্গ ছবি একটি বেনামা ফেইজবুকে পোষ্ট হবার পর তা সকলের দৃষ্টি গোচর হয়। এ বিষয়ে যারাই মুখ খুলতে চেয়েছেন তাদের সকলকেই চাকুরী হারানোর ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ল্যাব এইড এর বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, ম্যানেজার মেহেদী হাসান দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় ধরে ক্লিনার পোষ্টে কর্মরত সুমী আক্তার এর সাথে একটি অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেন এবং অফিস টাইমে ম্যানেজার তার ব্যাক্তিগত ব্যবহৃত রুমে (রুম নম্বর ২২০) ক্লিনার সুমি আক্তার কে নিয়ে দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন এবং বিভিন্ন সময় তাদের অপ্রস্তুত অবস্থায় রুমের মধ্যে দেখা যায়। বিষয়টি দিন দিন আরও খারাপের দিকে যেতে থাকলে আমরা একটি দরখাস্ত ঢাকার ল্যাব এইড এর হেড ব্রাঞ্চে প্রদান করি। পরে ঘটনা তদন্তের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম ফরিদপুর শাখায় তদন্তে এসে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ক্লিনার সুমি আক্তারকে তাৎক্ষনিক বরখাস্ত করেন কিন্তু ম্যানেজার মেহেদী হাসান এই জঘন্যতম অপকর্মের পরেও অদৃশ্য শক্তির ফলে একই পদে বহাল থাকায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভিতর প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। সরেজমিনে গিয়ে ল্যাব এইড ফরিদপুর শাখার ক্লিনার সুমি আক্তারের খোজ নিয়ে জানা যায় তাকে সাময়িক ভাবে অফিস ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ল্যাব এইড ফরিদপুর শাখার হেল্প ডেস্ক এ ক্লিনার সুমি আক্তারের মোবাইল নম্বর চাইলে তারা তা ম্যানেজারের অনুমতি ছাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এদিকে ক্লিনার সুমি আক্তারের বাসায় গিয়ে তার সহিত কথা বললে সে ক্ষোভের সাথে জানান, তিনি সম্পূর্ন নির্দোষ ম্যানেজার তাকে বিভিন্ন ভাবে হেনেস্থা করতেন কিন্তু প্রতিবাদ করলে চাকুরী খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন, তাই বিষয়টি নিয়ে কারো সাথে কথা বলার সাহস পাননি। এ ছাড়াও আরো তথ্যের জন্য সুমি আক্তার এর সাথে মুঠাফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। এই সকল ব্যাপারে ল্যাব এইড ডায়াগনষ্টিক শাখার হেড অফিসের জি .এম মো: শাখাওয়াৎ হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেন এবং এই ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে বলে জানান। ল্যাব এইড ডায়াগনষ্টিক এর সি.ই.ও আল ইমরান চৌধুরীর সাথে ফোনে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান বিষয়টির ব্যাপারে তাহারা অবগত রয়েছেন এরং দ্রুত এই বিষয়ে তাহারা ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন বলে আস্বস্ত করেন। এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে সনামধন্য প্রতিষ্ঠান ল্যাব এইড হলেও ফরিদপুর শাখায় রোগীদের সাথে খারাপ আচরন, ডিসকাউন্ট প্রতারনা, ডাক্তারদের অপ্রয়োজনীয় টেষ্ট, দূর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত বাথরুম, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা হয়রানীসহ ম্যানেজার মেহেদী হাসান ও সহকারী ম্যানেজার (এডমিন) সোহাগ এর অনৈতিক কর্মকান্ড ল্যাব এইডের সুনাম কে শুধু ধংসই করছে না বরং সাধারন জনগনের কাছে ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে বলেও ক্ষুব্দ কর্মকর্তা কর্মচারিরা অভিযোগ করেন। তাই প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে সঠিক তদন্ত করে ম্যানেজার সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তারা।