ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের মধ্য আড়পাড়া বালুচর গ্রামের চরপাড়ার প্রায়ে ১ কিলোমিটার কাঁচা মাটির রাস্তা। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বৃষ্টি হলেই কাদা-পানির সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ও মাটি মিশে কাদায় একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েন ওই এলাকার শত শত মানুষ সহ কৃষিকাজে নিয়োজিত বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা রাস্তাটিতে ইটের ছোঁয়া লাগায় আর প্রায় ১ কিঃ মিঃ বাকী থাকার দরুন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী ও কৃষিকাজে ব্যবহৃত জনসাধারন । কারন দোয়ালের মাঠ সহ আরও বিভিন্ন মাঠের ফসল এই রাস্তা দিয়ে আনতে হয় । তাই বৃস্টির দিনে ভোগান্তি আর ভোগান্তি। সরেজমিনে বুধবার গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মধ্য আড়পাড়া গ্রামের “বালুচর তিন রাস্তার মোড় হতে দোয়াল পর্যন্ত ইটের রাস্তা যাওয়ার পর বালুচর মসজিদ ছেড়ে সামনে খোকন মৃধার বাড়ী থেকে জমির শেখ এর বাড়ি পর্যন্ত” প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো পথের ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে কাদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, বৃদ্ধ সহ অন্য সবার এবং কৃষি কাজে ব্যবহৃত জনসাধারন। সারা বছরের ন্যায় বৃস্টির এই দিনে প্রায় ৩/৪ মাস ভোগান্তির শিকার হতে হয় গ্রামবাসীর। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। এই এলাকার মানুষের আতংক ও ভয়ের আরেক নাম বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে যা পায়ে চলাচল সহ কোন প্রকার যানবাহন নিযে চলাচল করা যায় না। পোহাতে হয় শুধু কস্ট আর ভোগান্তি । ফলে কেদে ফেলায় পথচলাচলের জনসাধারন। কাদার জন্য গ্রামের এ রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিকসা ঢোকে না। মোটরসাইকেল, সাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায়। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে পারে না। অনেক সময় কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলতাফ হোসেন বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না, নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। কৃষিপণ্য সময়মতো বিক্রি করতে পারি না। আমাদের ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। বিশেষ করে বৃষ্টি-কাদার দিনে জুতা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে প্রায় ১ কিঃমিঃ কিলোমিটার কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। আর কত কাল এ কষ্ট করতে হবে কে জানে। ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এলাকায় প্রচুর কৃষি ফসল উৎপাদন হয়। কিš‘ রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হতে না হতেই রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কি করে চলাচল করব আমরা কিছুই বুঝে পারি না। সামনে শুরু হবে এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষা। এই রাস্তা দিয়ে পরীক্ষার্থী আসলে- তাদের এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হবে । জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্না দিয়েও পুরা রাস্তার জন্য কোনো ফল হয়নি। তাদের কাছে অনুরোধ আমাদের এই রাস্তার দিকে একটু নজর দেওয়ার জন্য। জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোস্তফা শেখ বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা। আস্তে আস্তে ইটের কাজ হচ্ছে । তবে বৃষ্টির কারণে কাদা হয়ে গেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে। আশা করি, খ্বু তাড়াতাড়ি এর একটা সমাধান হবে। এ বিষয়ে আড়পাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান বাবু ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম এর আবারও সরেজমিনে এসে রাস্তাটি পরিদর্শন করে আশু সমাধানের চেষ্টা করার জন্য বালুচরবাসী ও স্থানীয় সচেতন সমাজ দাবী জানান ।