স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী সজিব শেখ (২৯) নামে জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন ফরিদপুরের আদালত। মামলার প্রায় দীর্ঘ ৮ বছর পর মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ রায় দেন। একই সাথে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। রায় দেওয়ার সময় আসামি সজিব শেখ আদালতে উপচ্ছিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সজিব শেখ ফরিদপুর সদর উপজেলার বিলমামুদপুর গ্রামের লালমিয়া শেখের ছেলে। মামলার এজাহারেসুত্রে জানা যায় , বিবাহের পর স্বামী সজিব শেখ ও স্ত্রী শিখা ওরফে রেখা (২৫) ঢাকার দোহারের পশ্চিম লোটাখোলা এলাকায় ৯ বছর যাবৎ বসবাস করতেন। ঘটনার তিন মাস আগে ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলা সদরের চরকমলাপুর এলাকায় একটি টিনশেডে স্ত্রী, তিন ছেলেসহ ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। স্বামী রিকশা ও ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে, নেশা করতেন স্বামী সজিব শেখ। নেশার টাকার দাবীতে প্রত্যেকদিন মারতেন স্ত্রী রেখাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাতে স্ত্রীকে মারপিট শুরু করে স্বামী সজিব। মারপিটের একপর্যায়ে রেখার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও বটি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। অতঃপর গলায় রশি পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্বামী। এ ঘটনার একদিন পর নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আর মামলটি তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনছের আলী। পরে স্বামী সজিব শেখকে গ্রেপ্তার করা হলে ২০১৫ সালের ০২ ফেব্রুয়ারী বিজ্ঞ আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন সে। অতঃপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে এসআই এনছের আলী স্বামী সজিব শেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের পিপি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।