দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে শহর থেকে তৃণমূলে চলছে চুল চেরা বিশ্লেষণ। কার হাতে এবার যাচ্ছে নৌকা প্রতীক। এই আসনে সংসদ সদস্য পদে সাংগঠনিক কর্মদক্ষ প্রার্থীর হাতে নৌকা প্রতীক দেখতে চান তৃণমূলের ভোটার ও নেতা-কর্মীরা। বরাবরই এই আসনে একজন কর্মীবান্ধব, সাংগঠনিক কর্মদক্ষ সংসদ সদস্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন সদরবাসী। এবার জনপ্রিয় ও কর্মদক্ষ প্রার্থীর হাতে নৌকা মার্কা দেখতে চান তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী একজন সাংগঠনিক কর্মদক্ষ ও তৃণমূলের জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত বলে মন্তব্য করেন নেতাকর্মীরা। ৪৭ বছরের বর্ণাঢ্য আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী জনপ্রিয় ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী। তিনি বর্তমানে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে সফলভাবে টানা ১৯ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। জেলা পরিষদের একজন সাবেক সফল চেয়ারম্যান হিসেবেও তাঁর সুখ্যাতি রয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা তাঁকে একজন সাংগঠনিক ব্যক্তি হিসেবেই চিনেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আশা ভরসার শেষ ঠিকানা হিসেবে পরিচিত জনপ্রিয় ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী এবার জামালপুর-৫ (সদর) আসনে নৌকার মনোনয়ন চাচ্ছেন। একনজরে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন: বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৮০ সালে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও ১৯৮৪ সালে স্নাতক (ডিগ্রী) পাস করেন। ১৯৮৬ সালে ময়মনসিংহ আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন। ১৯৮১ সালে জামালপুর শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ১৯৮৩ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে ১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পান তিনি। তাঁর সংগঠনের প্রতি আপোষহীন প্রেম, সিদ্ধান্তে অবিচল, বিরামহীন পরিশ্রম, একাগ্রতা ও তৃণমূলের ভালোবাসায় ২০০৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর তিনি টানা ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ফলে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মঞ্চে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর নাম ঘোষণা করেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনের নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় জনসাধারণের প্রতিটি দরজায় গিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজে সর্বদা নিয়োজিত রেখেছেন ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী। এলাকার জনসাধারণসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা জামালপুর-৫ (সদর) আসনে তাঁকেই এবার নৌকার প্রার্থী হিসাবে দেখতে চান। এ লক্ষ্যে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সাধারণ ভোটারদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় ছুটছেন এবং স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীও আশা করছেন, জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী এবার নৌকার টিকিট পাবেন। কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১২-২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অগ্নিসংযোগ চালালে সেই সময় ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর সাংগঠনিক নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের সব রাজনৈতিক অপতৎপরতা প্রতিহত করা হয়। যেকোন রাজনৈতিক সমস্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং যেকোন পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ান তিনি। ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে দলের প্রতি শতভাগ আনুগত্য থেকে ত্যাগ স্বীকার করে এখন পর্যন্ত দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আর এ কারণে আমি দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এবার আশা করছি দল আমাকে নিরাশ করবে না। তারপরও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের হাইকমান্ড যার প্রতি আস্থা রাখবে তার হয়েই কাজ করবো। কারণ জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে সদরের আসনটি, যেকোনো রাজনৈতিক দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই আসনটি আমাদের হাতেই রাখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন,‘সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জামালপুর জেলাতেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অনেক উন্নয়ন প্রকল্প দৃশ্যমান হয়েছে। অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। সদরবাসীর ভাগ্য ও জীবনমান উন্নয়নে জীবনের শেষ সময়ে কিছু করে যেতে চাই।’