উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে লালমনিরহাটের তিস্তানদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দেখা দিয়েছে বন্যা। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে পানি কমে গেলেও বেড়েছে পানি বন্ধি লোকগুলোর ভোগান্তি। আবার পানি কমার সাথে সাথে তিস্তা নদীর কয়েকটা পয়েন্টে দেখা দিয়েছে ভাঙন। রবিবার (১৬ জুলাই) বিকাল ০৩:০০ টা তিস্তানদীর পানি প্রবাহ ডালিয়া পয়েন্টে রেকর্ড করা হয় পানির সমতল ৫১.৭০ মিটার (বিপদসীমা = ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৪৫ সে.মি নিচে। কাউনিয়া পয়েন্ট-পানির সমতল ২৮.৪৫ মিটার, (বিপদসীমা =২৮.৭৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৩০ সেঃ মিঃ নিচে। ধরলা নদীঃ শিমুলবাড়ি পয়েন্ট-পানি সমতল ৩০.৪৯ মিটার, (বিপদসীমা = ৩১.০৯ মিটার) যা বিপদসীমার ৬০ সেঃ মিঃ নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্ট -পানি সমতল ৫৮.৮৭ মিটার (বিপদসীমা =৬০.৩৫ মিটার যা বিপদসীমার ১৪৮ সেঃ মি নিচে। লালমনিরহাটে গতকাল সকাল ০৮ টা হতে আজ বিকাল ০৩ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতঃ ০ মিলিমিটার। এর আগে শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯ টায় তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানি প্রবাহ কমে বিপদসীমার নিচে চলে যায়। তবে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। তিস্তার বাম তীরে সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার কুটিরপাড়, চন্ডিমারী, বালাপাড়া এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বসতবাড়ি ও বেশ কিছু ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এদিকে চর এলাকা ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়ি ঘরে এখনো পানি রয়েছে। এখনো পানিতে ডুবে আছে আমন ধানের বীজতলাসহ অনেক ফসলি জমি। নদী চর ও নিম্নাঞ্চলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তা জেগে উঠলেও জমে আছে কাদা মাটি। ফলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। কিছুটা উঁচু বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও ঘরে বাইরে জমে আছে কাদা মাটি। ফলে কষ্ট হচ্ছে তাদের চলাচলে। উচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ করছেন। এখনো অনেক বাড়িতে নলকুপ, টয়লেট পানিতে তলিয়ে আছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়েছেন বানভাসি মানুষগুলো। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়া আর উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসা বন্ধ হওয়ায় দ্রুত কমেছে তিস্তা নদীর পানি। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। এখনো বেশ কিছু এলাকার ঘর-বাড়িতে নদীর পানি রয়েছে। তবে আপাতত লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির কোনো শঙ্কা নেই বলে তিনি জানান। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। আমরা সব সময় খোঁজ খবর রাখছি। জেলায় দুর্যোগকালীন ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৭ লক্ষ টাকা পানিবন্ধি পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনও এবং পিআইও দের মাধ্যমে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।