বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো ১/১১’র তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের মানুষ আর তত্বাবধায়ক সরকার চায় না। কিন্তু ইদানিং ১/১১’র কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে। তারা নানা জায়গায় গোপনে-প্রকাশ্যে বৈঠক করছে, বিভিন্ন দূতাবাসে ধর্ণাও দিচ্ছে, নানা ধরণের প্রেসক্রিপশনও দেয়া শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আর সে ধরণের সরকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ কাউকে দেবে না। আমাদের সার্বভৌম রাষ্ট্র চলবে আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী। আজ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
১/১১’র পর শেখ হাসিনার গ্রেপ্তার ছিল গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, ২০০৭ সালের এই দিনে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো হয়েছিলো। তারা বুঝতে পারেনি, মুক্ত শেখ হাসিনার চেয়ে বন্দি শেখ হাসিনা কম শক্তিশালী ছিলেন না। তিনি বলেন, তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকার বিএনপি-জামায়াতের সীমাহীন দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু সেই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা শেখ হাসিনার কণ্ঠ ও গণতন্ত্রের পথ চলাকে স্তব্ধ করতেই সেদিন তাকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সেদিন সুধাসদন তছনছ করেছিল। শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেছিল। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের পর হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করে। তারা সবাই বঙ্গবন্ধুকন্যার মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে শেখ হাসিনাকে ১১ মাস পরে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। আমাদের আন্দোলনে খালেদা জিয়াও সেদিন মুক্তি পেয়েছিলেন।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা পুণরায় শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চায়- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ব্যবসায়ীরা জানেন, বোঝেন সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশে শান্তি ও স্থিতি বজায় থাকবে, দেশ আরো এগিয়ে যাবে। সেজন্যই তারা একবাক্যে শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। তারা সবাই দাঁড়িয়ে পতাকা নাড়িয়ে তাদের সেই ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এর কারণ সাড়ে ১৪ বছরে দেশ বদলে গেছে। ব্যবসায়ীরা তো প্রকৃত চিত্রটা জানেন।
আওয়ামী লীগ কি বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিএনপির যেমন রাজনৈতিক কর্মসূচির অধিকার আছে আমাদেরও আছে। কয়েকদিন আগে বিএনপি সমাবেশ করেছে আমরাও করেছি, কই ঢাকা শহরে তো কোনো সমস্যা হয়নি। বিএনপি কর্মসূচি দিলে সরকারি দল হিসেবে আমাদের বাড়তি দায়িত্ব থাকে যাতে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি বজায় থাকে, আগুনসন্ত্রাসীরা মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে না পারে। রাজনৈতিক কর্মসূচির ব্যানারে যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় সে ক্ষেত্রে জনগণের সঙ্গে থাকা আমাদের দায়িত্ব। সে জন্যই আওয়ামী লীগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
বিএনপি মহাসচিব মানুষকে কাজ ছেড়ে রাস্তায় নামতে বলেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলকে বলবো আগে নিজেদের কর্মীদের মাঠে নামানোর ব্যবস্থা করুন। তাদের কর্মীরাই তো মাঠে নামে না। বহু আগে থেকে তারা জনগণকে এসব বলছে, কিন্তু জনগণের কি ঠেকা পড়েছে যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ঠিক করতে কিম্বা তারেক জিয়াকে হাওয়া ভবনে ফিরিয়ে নিতে রাস্তায় নামবে!