বিএনপি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, তারেক জিয়ার শাস্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এই চারটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, তাদের বক্তব্য চারটা বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বেগম জিয়ার হাটুর ব্যথা কমলো কিনা, গায়ের তাপমাত্রা ঠিক আছে কি নেই, তারেক জিয়া, তত্ত্বাবধায়ক ও নির্বাচন কমিশন। সেগুলো নিয়ে তারা ব্যস্ত। জনগণের কোনো বিষয় তাদের বক্তব্যের মধ্যে নেই।
রবিবার (৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা (বাইসস) আয়োজিত আলোচনায় সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। সভার মুখ্য আলোচক ছিলেন-জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৫ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রশংসা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে নির্বাচন হয়েছে, তা শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি ভারতে পশ্চিম বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৩৫ জন নিহিত হয়েছে। আমাদের দেশে এটি হয়েছে? সুতরাং আমাদের দেশে যেভাবে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচন করেছে সেটি দেশের জন্য উদাহরণ।
গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিএনপির উপর একটি চপেটাঘাত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাদের নেতা, কর্মী, সমর্থদের বলেছে নির্বাচন বর্জন করার জন্য। তাদের আহ্বানে জনগণ সাড়া দেয়নি। নির্বাচনে ৫০ শতাংশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এটি বিএনপির উপর চপেটাঘাত। এখান থেকে বিএনপির শিক্ষা নেয়া দরকার।
ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বললেন শ্যামল দত্ত
আলোচনা সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ছয়মাস পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বাংলাদেশের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী সক্রিয়। এদের ব্যাপারে আপনাদের সর্তক থাকতে হবে। কারণ আপনারই বাংলাদেশের জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি। কোনো বিদেশে প্রতিনিধি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্র নয়। বাংলাদেশের জনগণ নির্ধারণ করবে কেমন ও কিভাবে নির্বাচন হবে।
জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের আনাগোনা বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এদের দেশের মানবাধিকারের কোন খবর নেই। গত চার জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস ছিল। সেদিন নিজেরা নিজেরা মারামারি করে ১৯ জন লোক মারা গেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে কখনো এরকম ঘটনা ঘটেনি। আর তারা এসে আমাদের নানা উপদেশ দেয়। স্বাধীন যুদ্ধে এই দেশগুলো বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। এই দেশগুলো মুক্তিযোদ্ধে সপ্তম নৌ-বহর পাঠিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। তাদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষরাই দেশ স্বাধীন করেছে।
দেশের অগ্রগতি একটি গোষ্ঠী সহ্য করতে পারছে না মন্তব্য করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি গোষ্ঠী আছে, যারা কানাগলি, চোরাগলি খোঁজে, অন্ধকার পথ দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে, তারাই তাদের আমন্ত্রণ দিয়ে নিয়ে আসে। তারাই কিন্তু চায় না এই বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াক। সেই স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি সেটা একটি চক্রের সহ্য হচ্ছে না। সেই চক্রটি নির্বাচন আসলে ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম অর্থনীতির দেশ, মেট্রোরেলের দেশ, বাংলাদেশ এখন বঙ্গবন্ধু টানেলের দেশ, বাংলাদেশ এখন স্যাটেলাইটের দেশ। সে দেশের অগ্রগতি যাদের সহ্য হয় না, তারা ষড়যন্ত্র করবে।
বাইসস এর চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন-টেকনো মিডিয়া লি. এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. যশোদা জীবন দেবনাথ (সিআইপি), ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলীও, বাইসস মহাসচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।