উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ আবারও বেড়ে গেছে। এজন্য দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের সব কটি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। ফলে ৫টি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ধীরে ধীরে পানি ঢুকছে। শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৬ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিকাল ৩ টায় পানির প্রবাহ তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্ট-পানির সমতল ৫২.১১ মিটার (বিপদসীমা = ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৪ সে.মি নিচে কাউনিয়া পয়েন্ট-পানির সমতল ২৮.০৭ মিটার, (বিপদসীমা =২৮.৭৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৬৮ সেঃমিঃ নিচে। ধরলা নদীঃ শিমুলবাড়ি পয়েন্ট -পানি সমতল ৩০.১৭ মিটার, (বিপদসীমা = ৩১.০৯ মিটার) যা বিপদসীমার ৯২ সেঃমিঃ নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্ট -পানি সমতল ৫৭ .৭৫০ মিটার, (বিপদসীমা =৬০.৩৫ মিটার) যা বিপদসীমার ২৬০ সেঃ মি নিচে। লালমনিরহাটে গতকাল সকাল ০৮ টা হতে আজ সকাল ৮ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতঃ ০ মিলিমিটার। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শনিবার শেষ রাত থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে পানি। এতে হাতীবান্ধাস্থ তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ফলে জেলার পাঁচ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ধীরে ধীরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পানি বাড়ায় তিস্তা নদীর বুক জুড়ে থাকা ফসলি জমি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে মরিচ, পেঁয়াজ, তামাক, ভুট্টা, বাদাম, বীজতলা, ধানসহ বিভিন্ন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকা পাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নে বেশ কিছু এলাকায় পানি বন্ধি হয়ে পড়েছেন কয়েকশত পরিবার। এদিকে ধরলা নদীর পানিও বাড়া-কমার মধ্যে আছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার। বর্ষা মৌসুমে জুন মাসের শুরু থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। প্রথম দফা স্বল্পমাত্রার বন্যার পর পানির গতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও গত বুধবার ভোর থেকে বাড়তে শুরু করে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। তবে বিকেল হতেই নেমে যায়। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ এবিষয়ে বলেন, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সকালে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এখন কমতে শুরু করেছে। জরুরি প্রয়োজনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করায় প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। আমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওদের মাধ্যমে সব পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছি।