কক্সবাজারের টেকনাফের বার্মিজ মার্কেটে ভয়াবহ আগুনে কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিক ও মুদিখানাসহ নানা ধরনের দেড় শতাধিক দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। মালামালের পাশাপাশি পুড়ে গেছে নগদ টাকা ও অন্যান্য সরঞ্জাম। আগুনে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দিনগত মধ্যরাত ২টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে টেকনাফ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপরের বাজার নামক বার্মিজ মার্কেটে আগুন লাগে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুড়ে যাওয়া বার্মিজ মার্কেটের পাহারাদার মোহাম্মদ কাইয়ুম জানান, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে মার্কেটে হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত চারদিক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট, পুলিশ ও বিজিবি, উপজেলা প্রশাসনের সদস্যসহ স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
উপরের বাজার বার্মিজ মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস বলেন, প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী মার্কেটের ৮৫টি কাপড়ের দোকান, ২০টি কসমেটিকস দোকান এবং আচার ও বিবিধ পণ্যের ২০-২৫ দোকান এবং ১৫-২০টি মুদিখানাসহ প্রায় দেড়শ’র অধিক দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টেকনাফ স্টেশনের কর্মকর্তা মুকুল কুমার নাথ বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট কাজ করে। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, পৌরসভার বার্মিজ মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। স্থানীয় লোকজনসহ ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণসহ দোকানে আটকেপড়া লোকজনকে উদ্ধারে তৎপরতা চালানো হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রায় দেড় শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে। পুড়ে গেছে সিংহভাগ মালামাল। এতে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম বলেন, সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার পাশাপাশি দোকানের ভেতর রাত যাপন করা ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বের করার চেষ্টা করেছি। আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সকালেও মার্কেট এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। তা নেভানোর কাজ চলেছে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, গত একযুগে কক্সবাজারে একসঙ্গে এতগুলো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের শান্তনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছি না। কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণে চেম্বার চেষ্টা চালাচ্ছে।