লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় বোন নির্যাতনের অভিযোগ করায় ভাইকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার(৩ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে জামাতা ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আহত যুবকের বাবা নুর ইসলাম। অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের আদিতমারী কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে খোরশেদ আলম(৩২) ও রাশেদুল ইসলাম(২৬)। অভিযোগে জানা গেছে, আদিতমারী কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে রাশেদুল ইসলামের সাথে আড়াই বছর আগে বিয়ে হয় মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে নিলুফা বেগমের। বিয়ের পর থেকে যৌতুক দাবি করে আসছে স্বামী রাশেদুল ও তার পরিবার। যৌতুকের দাবি পুরন না করায় গত ১৪ এপ্রিল নিলুফাকে বেধম মারপিট করে স্বামী রাশেদুল ও তার পরিবারের লোকজন। স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে পরদিন স্বামী রাশেদুলসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গৃহবধূ নিলুফা। থানা পুলিশ ওই বাড়িতে ঘটনার তদন্ত করেও দীর্ঘ আড়াই মাসেও কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় অভিযুক্তরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। থানায় অভিযোগ করায় এবং পুলিশ পাঠানোর কারনে নিলুফাদের পুরো পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকী দেয়া হয়। এরই জের ধরে রোববার (২ জুলাই) রাতে স্থানীয় তিস্তা স্প্যার বাঁধের নিজেস্ব দোকানে বসে থাকা নিলুফার ভাই আরিফুল ইসলামকে (২৩) অতর্কিত ভাবে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে খোরশেদ ও তার ভাই রাশেদুল। দায়ের কোপে মেঝেতে পড়ে গেলে তার দোকান লুটপাট করে ছটকে পড়ে হামলাকারীরা। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আহত আরিফুলকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আহত আরিফুলের বাবা নুর ইসলাম বাদি হয়ে রাশেদুল ও খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বাদি নুর ইসলাম বলেন, যৌতুক না পেয়ে তারা আমার মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। তার বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তাই তারা আবার আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়েছে। গরিব মানুষ কোথায় বিচার পাব? মেয়ের অভিযোগের ব্যবস্থা নিলে আজকে ছেলের উপর হামলা করতে পারত না তারা। আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. আশরাফুজ্জামান বিপ্লব জানান, ধারালো অস্ত্রে মাথার দুই স্থানে আঘাত পেয়েছে। ১১টি সেলাই দিতে হয়েছে। আরিফুল আপাতত আশংকামুক্ত রয়েছেন। আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, আপোষ করতে চাওয়ায় আগের অভিযোগটি আমলে নেয়া হয়নি। তবে বাদির ভাই আরিফুলকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগটি আমলে নেয়া হচ্ছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।