ঠাকুরগাঁওয়ে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের বর্ণাঢ্য রথ শোভাযাত্রা বের করা হয়। ২০ জুন মঙ্গলবার শান্তি ও মঙ্গল কামনায় মন্দির প্রাঙ্গনে ভক্তদের নিয়ে হোম যজ্ঞ, রথযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শ্রী শ্রী গোবিন্দজিউ মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মন্দির থেকে রথযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের আশ্রমপাড়াস্থ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। অপরদিকে বিকেলে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইসকন ঠাকুরগাঁও জেলায় আয়োজনে শ্রী শ্রী গোবিন্দজিউ মন্দির থেকে আরও একটি রথযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের টাঙ্গন নদীর পারে অবস্থিত শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। রথযাত্রা শুরুর সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহ: সাদেক কুরাইশী। রথযাত্রায় অংশ নেন মুন্সিরহাট ইসকন প্রচার কেন্দ্রের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র আগরওয়ালা, ইসকন বাংলাদেশের সহ সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও গড়েয়া ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি বিনয় স্বামী মহারাজ, এ্যাড. শেখর কুমার রায়, ঠাকুরগাঁও জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাড. অরুনাংশু দত্ত টিটো, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মনতোষ কুমার দে, ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি দ্রৌপদী দেবী আগারওয়ালা, ঠাকুরগাঁও জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সন্তোষ কুমার আগারওয়ালা, ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা শাখার সভাপতি অশোক কুমার ঘোষ, গড়েয়া ইসকন মন্দিরের সহকারী অধ্যক্ষ কংসহন্ত দাস সহ অন্যান্যরা। রথযাত্রায় সনাতন ধর্মালম্বী হাজারো নারী ও পুরুষ অংশ নেন। জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব উপলক্ষে শহরের শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দিরে ৮ দিন ব্যাপী সনাতন ধর্মসভা, অগ্নিহোত্র হোমযজ্ঞ, পদাবলী কীর্তন, বৈদিক নৃত্য, নাটক, বৈদিক চলচ্চিত্র, ছাত্র-ছাত্রীরদ পারমার্থিক প্রতিযোগিতা, মাল্টিমিডিয়া সেমিনার, মহা হরিনাম সংকীর্থন ও মহাপ্রসাদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হবে। পরে ২৭ জুলাই উল্টো রথ পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হবে। উল্লেখ্য, পঞ্জিকা অনুসারে আষাঢ় মাসের শুকাপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। মনে করা হয়, জগন্নাথদেবের রথের প্রতিটি অংশ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। তিনটি রথে তেত্রিশ কোটি দেবদেবী অধিষ্ঠান করছেন। ফলে রথের রশি স্পর্শ করলেই তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর চরণ স্পর্শ করা হয়। এছাড়া প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে রথের রশি স্পর্শ করলে পুনর্জন্ম হয় না। এছাড়া মনে করা হয়, সকল পাপ থেকেও মুক্ত হওয়া যায়। জগন্নাথদেবের রথ টানতে পারলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফললাভ হয়। নববিবাহিতরা রথের রশি ছুঁয়ে তাই প্রভুর আশীর্বাদ নেন। এছাড়া ভক্তদের মতে এই রথের রশির মাথায় ঠেকালে আর দুস্বপ্ন আসে না। রোগ থেকেও মুক্তি লাভ হয়।