গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা, ভ্যানগাড়ি ও সিএনজি বাড়ছে দূর্ঘটনা। গত কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর আবার চলছে এসব অবৈধযান। দ্রুত গতির দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে এসব অবৈধ ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে মাসোহারা নিয়ে এসব অটোরিকশা ও সিএনজি চলতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ বলছে নামসর্বস্ব কিছু অসাধু সাংবাদিকদের নামে চলছে এসকল অটোরিকশা। হাইওয়ে পুলিশের উর্ধতনরা বলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরে শ্রীপুরে মাওনা হাইওয়ে থানার আওতাধীন বাঘের বাজার থেকে জয়না বাজার সিমান্ত এলাকা পর্যন্ত অবৈধ ভাবে চলছে শত শত অটোরিকশা। মহাসড়কে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় পুলিশের র্সোস সোহেল রানা ও মিলনের মাধ্যমে প্রায় ৩০-৪০টি অবৈধ অটোরিক্সা চলাচল করছে। এসব অটোরিক্সা থেকে মাসিক ৮-১০ হাজার টাকার চুক্তিতে তারা মহাসড়কে অটো চালাচ্ছে। তার একটি অংশ পুলিশকে দিচ্ছে। তবে পুলিশ টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। মাষ্টারবাড়ি এলাকার জাফরের মাধ্যমে অটো রিক্সা চলাচল করছে। আর সব অটোরিক্সা মাওনা চৌরাস্তার পুলিশের সামনে দিয়ে মহাসড়কে যাত্রী উঠানামা করছে। অভিযুক্ত পুলিশের র্সোস সোহেল রানার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মহাসড়কে অটোরিক্সা চলাচল করে মাসিক টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন আমার ৫-৭টি অটোরিক্সা রয়েছে। আমার সাথে দেখা করেন।
ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করছে শত-শত অটোরিকশা। চালকরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, কখনো র্দূঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে লাইনে দাঁড়িয়ে ডেকে ডেকে যাত্রী উঠাচ্ছে পুলিশের সামনে। বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে অনেক অটোরিকশা উল্টে পড়ছে। তাতে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় কথা হয় নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলা অটোরিকশা চালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। সে জানায় স্থানীয় পুলিশের এক অবসরপ্রাপ্ত সদস্য আজিজুল ইসলামের মাধ্যমে মাসোহারা করে অটোরিকশা চালাচ্ছি। নয়নপুর এলাকায় অটোরিকশা চালক আব্দুল হক মিয়ার সঙ্গে কথা হয়, সে জানায় আমার পরিচিত এক আত্নীয়র মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে অটোরিকশা চালাচ্ছি। গরিব মানুষ কি করবো, আঞ্চলিক রাস্তায় অটোরিকশা তেমন ভাড়া হয় না। গাড়িরও অনেক ক্ষতি হয়। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়কে অটোরিকশা চালাচ্ছি। অভিযান হলে অন্য দিকে চলে যায়। উপজেলা মাওনা চৌরাস্তার উড়াল সেতুর নিচে কথা হয় অটোরিকশা চালক সুলতান বেপারীর সঙ্গে তিনি জানান, মাসোহারা না দিয়ে কি মহাসড়কে অটোরিকশা চালাতে দেয়। এতদিন মাসোহারা দেয়নি তাই চলতে দেয়নি। পুলিশকে টাকা দেয় না সরাসরি, তবে পুলিশ কোন না কোন ভাবে মাসোহারার টাকা পুলিশ পায়। মাওনা চৌরাস্তা ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ সরকার বলেন, একমাস আগে মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশা চলাচল একেবারে বন্ধ ছিলো, হঠাৎ আবারও অদৃশ্য কারণে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতশত অবৈধ অটোরিকশা। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে মহাসড়ক নিরাপদ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহবান জানাচ্ছি। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কংকন কুমার বিশ্বাস বলেন আমার হাইওয়ে থানার আওতাধীন মাসিক চুক্তিতে কোন অটো রিক্সা চলাচল করে না। আমরা প্রতিনিয়ত মহাসড়কে অবৈধ অটো রিক্সা আটক করে নিয়মিত জরিমানা আদায় করছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমি গত কয়েক মাস যাবৎ অটোরিকশা পুরোপুরি বন্ধ করেছিলাম। আবারও নামসর্বস্ব কিছু সাংবাদিক অটোরিকশা চালানো শুরু করছে৷আমার পুলিশ কোন অটোরিকশা থেকে সুবিধা নেয় সেটি আমি জানি না। এরকম প্রমাণ পেলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মহাসড়ক অবৈধ অটোরিকশা চলাচল দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করা হবে। হাইওয়ে পুলিশের কোন সদস্য অবৈধ অটোরিকশা থেকে অনৈতিক সুবিধা নেয় সেটির প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হাইওয়ে ডিআইজি ঢাকা বিভাগ (উত্তর) মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান মহাসড়কে অটোরিক্সা সিএনজি চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। র্শীঘই অবৈধ যান চলাচলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।