জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, শ্রীলঙ্কাকে ফলো করেন, দেখবেন তাদের রিজার্ভ সংকট ছিলো। তারা তেল আনতে পারেনি, কয়লা আনতে পারেনি। যার কারনে তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। এক সঙ্গে তারা বিভিন্ন পন্য ইমপোর্ট করতে পারেননি। সাধারনভাবে মানুষের মধ্যে বিরাট মূল্যস্ফীতি হয়েছিলো। সাধারণ মানুষ চাকরি হারাচ্ছিলো। সাধারণ মানুষ আয় ইনকাম হারাচ্ছিলো, সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি হচ্ছিলো। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন সেই পরিস্থিতি চলছে। শ্রীলঙ্কা অনেক পন্য বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে পাচ্ছে। আমাদের মূল্যস্ফীতি হয়েছে, আমাদের মানুষের আয় ইনকাম কমেছে, বেকারত্ব বেড়েছে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রিজার্ভ কমেছে, আমাদের ইমপোর্ট কমেছে। সব কিছু মিলে আমরা শ্রীলঙ্কার কাছাকাছি চলে গেছি। টাঙ্গাইলে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথি বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি। জিএম কাদেরবলেন, শ্রীলঙ্কার সাথে আমাদের একটি পার্থক্য আছে। শ্রীলঙ্কার মানুষ রাস্তায় নেমেছিলো, সে দেশের সরকার যেভাবে ট্যাকেল দিয়েছে, তাতে প্রমাণ হয়েছে, পুলিশ যে তাদের বন্ধু, সেটাই তারা দেখিয়েছে। সেখানে বড় কোন বিরোধী দল ছিলো না। মানুষই স্বতঃস্ফুর্তভাবে নেমেছে। আমাদের দেশের মানুষ এখনও নামেনি, এটাই পার্থক্য। তিনি আরও বলেন, বর্তমান শাসন প্রদ্ধতিতে শতকরা ১০০ ভাগ শক্তি প্রধানমন্ত্রীর হাতে। সেখানে নির্বাচনকালীন মন্ত্রী বা সংসদে কে কতটা আসন পেলো সেটি ম্যাটার নয়। প্রধানমন্ত্রী যদি থাকেন তাহলে নির্বাচনকালীন সরকার, সব সরকার একই ধরনের হবে। শহরের রাইফেল ক্লাবে আয়োজিত সম্মেলনে ভিসানীতির বিষয়ে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আমরা ভিসানীতিকে সমর্থন করি। ভিসানীতিতে যা বলা হয়েছে তা জনগনের পক্ষে বলা হয়েছে, বিপক্ষে নয়। অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন যারা বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের সে দেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। সেখানে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকবে। এখানে অখুশি হওয়ার মতো কিছু দেখি না, সরকারও এখানে অখুশি হননি। অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন কেউ চায় না এ কথা প্রকাশ্যে কেউ বলছেন না। মনে মনে কেউ বলতে পারেন। জিএম কাদের আরও বলেন, মুক্তিযদ্ধের সময় আমরা একটা পোস্টার দিতাম, সোনার বাংলা শ্মশান কেন ? এখন মনে হয় সোনার বাংলা মরুভূমি কেন ? পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই খাবার নেই। মরুভূমি না এটি। তিনি বলেন, আমরা অনেক কিছুইতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবার হয়েছি মাদক দ্রব্য সংক্রান্ত অর্থ সরবরাহ কাজে এশিয়ায় প্রথম আর বিশ্বে পঞ্চম হয়েছি। বিদেশী একটি সংস্থার জড়িপে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্যে জানানো হয়েছে এ সংক্রান্ত কাজে পাঁচ হাজার কোটি টাকা সরবরাহ হয়েছে। জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আব্দুস ছালাম চাকলাদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কাশেম, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, ঢাকা বিভাগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ। এসময় জাতীয় পার্টির জেলা ও উপজেলা নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।