ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রাম। গ্রামে গড়ে উঠেছে পদ্মা গ্রন্থাগার। এই গ্রন্থাগার শিক্ষা ও সভ্যতার আলো ছড়াচ্ছে গ্রামাঞ্চলে। ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামটি বাংলাদেশের অন্য আর সব গ্রামের মতোই। যে কিশোর-কিশোরীরা সারা দিন অন্য সব খেলাধুলা বা মোবাইলে বুঁদ থাকত, তারা এখন সুযোগ পেলেই ঢু মারে এই পাঠাগারে। শিশুদের কাছেও এ পাঠাগার অন্যতম পছন্দের জায়গা। বর্তমানে ২ হাজারেরও বেশি বই রয়েছে পদ্মা গ্রন্থাগারটিতে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, জীবনী, চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক বই, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র, মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, শিশুসাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে বইপত্র পাওয়া যায় এখানে। পাঠাগারের পশ্চিম পাশের একটি অংশজুড়ে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানা বই। আর এসব বই পড়ে জ্ঞান আহরণ করতে প্রতিদিনই সেখানে ছুটে আসেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ বইপ্রেমী মানুষেরা। বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন, আশপাশের ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ পাঠাগারে নিয়মিত আসে। এতে তাদের মধ্যে পাঠাভ্যাস তৈরি হচ্ছে। পাঠাগারে আসা রানা, মৌসুমি, দিপক সহ কথা হয় মিমের সাথে। তারা বলেন, যখন ক্লাস থাকে না তখনই চলে আসি এই পাঠাগারে। এখানে এসে গল্পের বই, স্কুলের বই-পত্রিকাসহ নানা রকম বই পড়ি। আগে অবসরে শুধু টিভি আর মোবাইলে গেমস খেলে সময় পার করতে হতো। এখন বই পড়ে অনেক আনন্দ পাই আমরা। ২০২০ সালে পদ্মা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এই গ্রামে জন্ম নেওয়া প্রদীপ রায়। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার রয়্যাল মেলবোর্ন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গ্রন্থাগার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। প্রদীপ রায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বই পড়ি উন্নত সমাজ গড়ি এই স্লোগানকে সামনে রেখেই পদ্মা লাইব্রেরির যাত্রা শুরু। তরুণ সমাজ গ্রন্থাগারে যাবে, নিজে বিকশিত হবে ভালো ভালো জ্ঞানের বই পড়বে এটি আমরা প্রত্যাশা করি। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের সকলের সাহায্য সহযোগিতা পেলে এই গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, লাইব্রেরি হচ্ছে জ্ঞানের প্রদীপ যার মাধ্যমে জ্ঞানের আলো ছড়ায়। আমরা যদি এমন কোনো লাইব্রেরির সন্ধান পাই তাহলে আমাদের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাদেরকে বই দিয়ে সাহায্য করা হবে।