গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড সংক্ষেপে কেএসএস লিমিটেডে (রেজি: ৩১; সংশোধিত রেজি: ৬/১৭)। ২০২১ সালে কার্যক্রম শুরু করলেও চলতি বছরের শুরুতেই সঞ্চয় ও ঋণদানে বৈধতা বা জবাবদিহিতা না রেখে তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এ পর্যন্ত তারা উপজেলার মহিমাগঞ্জ, ফাঁসিতলা, কামদিয়া, কাটাবাড়ী, নাকাই, তালুককানুপর, কোমরপুরে দৃষ্টিনন্দন অফিস ও সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রায় দশের অধিক বিতরণ কেন্দ্র খুলেছে। সম্প্রতি তারা পাশের ঘোড়াঘাট, পলাশবাড়ী ও শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের নিকটবর্তী বিতরণ কেন্দ্রের সদস্য করে সঞ্চয় তুলছে। গত কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদপত্রে কাটাবাড়ী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ফলে এর সদস্য, উপজেলার লোকজন ও প্রশাসনের টনক নড়ে। এর জেরে কেএসএস লিমিটেড নিজেদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কয়েকটি বিতরণ কেন্দ্রে ছাগল বিতরণ কর্মসূচি করে তা ফেসবুক সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রচার করে এবং উপজেলার বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। গত শনিবার (১০ জুন) ফুলবাড়ি (ফুটানি বাজার) শাখায় ৬ জন সদস্য ২০ হাজার টাকা ঋণ নিতে আসলে তাদের কোন ঋণ দিতে না পারায় ঐ সদস্যরা সঞ্চয়রের টাকা ফেরত নিয়ে যান। বিষয়টি মানুষের মুখে মুখে প্রচার পেলে দুপুরে হাজার হাজার সদস্য বিতরণ কেন্দ্রটি ঘেরাও করে এবং শাখা ব্যবচ্ছাপক সহ জিএমকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের গ্রেফতার করে মানি লন্ডারিং আইনে জেল হাজতে প্রেরণ করে। শনিবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ শাখার ম্যানেজার, মাঠকর্মী ও জিএম ফজলুল করিমকে অবরুদ্ধ করে রাখা সহ সদস্যরা দফায় দফায় গোবিন্দগঞ্জ টু গাইবান্ধা ভায়া নাকাইহাট সড়ক অবরোধ করে। উত্তেজিত সদস্যরা এক সময় সমিতির সাইনবোর্ড ভাংচুর ও অফিসে হামলার প্রস্তুতি নিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পরিচ্ছিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার পেলে বেশ ভাইরাল হয়। পরে উপজেলা সমবায় অফিসার এ এইচ এম তারিকুল শরিফ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফ হোসেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার (সি-সার্কেল) উদয় কুমার সাহা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইজার উদ্দিন মধ্যরাতে কেএসএস লিমিটেডের পরিচালক (এমডি) আওরঙ্গজেবকে সাথে নিয়ে ঘটনাচ্ছলে উপচ্ছিত হন। সেখানে উপচ্ছিত ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান শিবলু সহ গ্রাহকদের জমানো টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে এমডি ও জিএম সহ অন্যান্যদের থানায় নিয়ে আসা হয়। এমডি-জিএম থানায় জানান, সমবায় সমিতির নামে একের অধিক শাখা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং সদস্য সংখ্যা নির্দিষ্ট। কেএসএস লিমিটেড গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১০টি সহ পাশের পলাশবাড়ী উপজেলার কবির হাটে শাখা খুলে সমবায় আইনকে অমান্য করেছে। গত মে মাস পর্যন্ত এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০ থেকে ৩০ হাজার। যা সম্প্রতি প্রায় ৪০ হাজার সদস্য সংখ্যা এতটাই বেশি যে, আমরা এর পরিচালককে হেফাজতে নিলেও ঠিক কীভাবে আগ্রহীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দিব তা ভেবে পাচ্ছি না। এছাড়াও সমিতিটির নিজ নামে খোলা কোনো একাউন্টে গ্রাহকের জমানো কোটি কোটি টাকা রাখা হয়নি। এক্ষেত্রে পরিচালক স্বেচ্ছাচারিতা করায় গ্রাহকরা তাদের সঞ্চয় ঠিক কীভাবে ফেরত পাবেন তা নিশ্চিতকরণে আমরা এখনও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।