ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামুলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা মঙ্গলবার পঞ্চগড় সদর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতিক কেদ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ কর্মশালার আয়োজন করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক মা. শামীম সিদ্দিকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, সরকার ধর্মীয় মুল্যবাধ সম্পন্ন অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দেশের বিভিন প্রান্তে নিয়মিত ধর্মীয় সংলাপ, মতবিনিময় সভা ও আলাচনা সভার আয়াজন করে যাচ্ছে। জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এ দেশকে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য একটি নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদর বিষয়ে আমাদর সরকার সজাগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযাদ্ধা এটিএম সারোয়ার হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু তৌয়াবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর জোর দিয়ে বক্তারা বলেন, মানুষ হিসেবে মানুষের মাঝে সামাজিকতা, ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে হবে। গুজব ও অপপ্রচারে কান দিয়ে কোন রকম বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। মসজিদ, মন্দিরের মাইক ধর্মীয় বয়ান, প্রার্থনা ছাড়া কোন ধরনের উগ্র ও বিদ্বেষমুলক এবং দাঙ্গা ছড়াতে পারে এমন কাজে ব্যবহার না করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপক্ষতা’র মুলনীতি লিপিবদ্ধ করেছিলেন। ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন সময় স্বার্থনেষি মহল বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুদুর পরিবেশকে নস্যাৎ করতে চায়। এ বিষয়ে আমাদর সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষক আবু সায়েম প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন। প্রশিক্ষণে তিনি দেশ যাতি কোনাভাবই উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ফিরে না আসে- এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে বলে জানান তিনি। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে মসজিদের খতিব, ইমাম ও ধর্মীয় নতবদক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা তাদের আলোচনা, বয়ান ও খুতবায় মানুষকে মাদক, বাল্যবিবাহ, নারীর প্রতি সহিংসতা, ভিন্ন ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান, সন্ত্রাস -জঙ্গিবাদ সহ নানাবিধ সামাজিক সমস্যার কুফল বিষয়ক জনগণকে সচেতন করে বক্তব্য রাখছেন। দেশে অধিকাংশ মডেল মসজিদে ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। অবশিষ্ট মসজিদ সমূহ শিগগিরই চালু হবে। এসব মসজিদর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খতিব, ইমাম ও ধর্মীয় আলাচকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা গেলে অনেক সামাজিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।