তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ছুঁইছুঁই। এর ওপর ঘনঘন লোডশেডিং। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ অঞ্চলে তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের উত্তর জনপদ দিনাজপুরের মানুষের জনজীবন। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, গত কয়েক দিন ধরেই দিনাজপুরসহ এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২৯ মে দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩০ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর বুধবার দিনাজপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বুধবার দিনাজপুরে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৫ শতাংশ। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই অঞ্চলে তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এদিকে গত কয়েক দিন থেকে প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। নর্দার্ন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) কর্মকর্তারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই এলাকা ভাগ করে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। দিনাজপুর শহরের ছোটগুড়গোলা এলাকার বাসিন্দা সলিলেশ্বর বসাক জানান, একবার বিদ্যুৎ গেলে তিন ঘণ্টা কোনো খবর থাকে না। তিনি বলেন, দিনের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকলেও কোনো রকমে কষ্ট করে কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু রাতের বেলায় একবার বিদ্যুৎ গেলে আর বিছানায় থাকা যায় না। শহরের রাজবাটী এলাকার সাদেকুল ইসলাম জানান, অসহনীয় গরম আর লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দুর্বিষহ এই অবস্থা আর কতদিন চলবে বলে প্রশ্ন তার। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও বেশি। গ্রামাঞ্চলে একবার বিদ্যুৎ গেলে চার-পাঁচ ঘণ্টা আর বিদ্যুতের দেখা মিলছে না বলে জানান গ্রামাঞ্চলের মানুষ। নেসকোর দিনাজপুর ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজলুর রহমান জানান, তার এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট। যদিও প্রচণ্ড গরমে এসিসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা আরও বেড়েছে। এর মধ্যে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ১৩ থেকে ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। নেসকোর দিনাজপুর ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কালাম জানান, তার এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ২৮ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ১৮ মেগাওয়াট পর্যন্ত। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ কম পাওয়ায় এলাকাভিত্তিক ভাগাভাগি করে লোডশেডিং দেওয়ার কথা জানান নেসকোর এই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।