জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ হিসাবে উপস্থাপিত হবে যাত্রাপালা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাত আট টায় কবি নজরুলের লেখা নাটক বিদ্যাপতির ছায়া অবলম্বনে নির্মিত যাত্রাপালা ‘অনুরাধা’ গাহি সাম্যের গান মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে।
নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হীরক মুশফিক এর সম্পাদনা ও নির্দেশনায় অভিনেতা হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, তিনটি হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহ সর্বমোট ১৫ জন শিক্ষক অভিনয় করছেন যাত্রাপালাটিতে। এর ফলে ক্লাসরুমের বাইরে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকবৃন্দকে ভিন্ন রূপে দেখার সুযোগ পাবে।
নজরুল জন্মজয়ন্তীর অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে যাত্রাপালার মত ভিন্ন রকম আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বাড়তি উচ্ছ্বাস। শিক্ষার্থী শ্যামল হাসান জানান,” সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলিকে এইভাবে মঞ্চে দেখতে পাবো এটা আমাদের জন্যে অন্য রকম একটা অনুভুতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম ব্যাতিক্রম আয়োজন নিয়মিত হওয়া দরকার। ”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর এর তত্ত্বাবধানে যাত্রাপালাটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন সঙ্গীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তন্বী সাহা। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ড. সোহেল রানা, ড. জাহিদুল কবীর, সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন অবন্ত, মাসুম হাওলাদার, রায়াহানা আক্তার, কল্যানাংশু নাহা, সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক, আসিফ ইকবাল, তানিয়া তন্বী, মাশকুরা রহমান, রাগীব রহমান এছাড়া বিদ্যাপতি চরিত্রে অভিনয় করছেন মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার প্রাপ্ত জনপ্রিয় অভিনেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মনোজ প্রামাণিক।
যাত্রাপালাটির পোশাক পরিকল্পনা করেছেন মাশকুরা রহমান, সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন ড. জাহিদুল কবীর এবং তন্বী সাহা, আলোক পরিকল্পনায় মেহেদী তানজীর এবং মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ড. তপন কুমার সরকার। সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগ এবং সঙ্গীত বিভাগ। যাত্রাপালাটির অন্যান্য বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী।
নজরুলের নাটক বিদ্যাপতি তে পঞ্চদশ শতকের মৈথিলি কবি বিদ্যাপতির সাথে মিথিলা রাজ্যের রাজা শিবসিংহের বন্ধুত্ব এবং প্রধানত একটি ত্রিমাত্রিক প্রেমময় বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। যার অন্তীমে ধৈর্য, ত্যাগ ও সৃষ্টিকর্তার সাথে সৃষ্টির প্রেমের যে মাহাত্ম্য, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
নাটকটির নির্দেশক নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হীরক মুশফিক জানান, “বর্তমানে সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চার যে টানাপোড়েন চলছে সেরকম একটি সময়ে এই উদ্যোগ নেয়ার পেছনে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক কারণ রয়েছে। বলা যেতে পারে প্রজন্মের সাথে শেকড়ের মেলবন্ধন ঘটাবার দায়মুক্তির ক্ষেত্রে ছোট্ট একটি প্রয়াস এটি। কৃতজ্ঞতা জানাই বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর স্যারকে, তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কাজটি করতে পারছি। আমি মনে করি, এটি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য হিসাবে উদাহরণ হতে পারে।”