ePaper

শীতের কারনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েছে ডায়েরিয়া রোগী

সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এরমধ্যে অধিকাংশই শিশু রোগী। চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত ১ সপ্তাহে সদর হাসপাতালের ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ২৮৩ জন রোগী। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ। এছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় দুই শতাধিকেরও অধিক রোগী। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর থেকে গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ২৮৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। আজ বুধবার বিকেল পর্যন্ত ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো ৪২ জনের অধিক রোগী। এরমধ্যে অধিকাংশই ছিলো শিশু। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামের সালমা খাতুন নামে এক শিশু রোগীর মা বলেন, আমার ৮ মাসের ছেলে গত ৩ দিন আগে ডায়েরিয়া জনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি করিয়েছি। রোগীর এতো চাপ যে এখানে থাকতেই সমস্যা হচ্ছে। তারপরেও ছেলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত থাকতে তো হবেই। চুয়াডাঙ্গা পৌর গুশানপাড়া এলাকার নাজমা খাতুন নামের আরেক শিশুর মা বলেন, আমার মেয়ের গত দু’দিন থেকে পাতলা পায়খানা আর বমি হচ্ছিল। সোমবার সকালে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। হাসপাতাল থেকে খাওয়ার স্যালাইনসহ যাবতীয় ওষুধ দিলেও স্যালাইন সেট ও ক্যানোলা সাপ্লাই নেই বলে জানিয়ে দিলে বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিব সাদী বলেন, হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সহ যাবতীয় ঔষধ সাপ্লাই আছে। তবে স্যালাইন সেট ও ক্যানোলা নেই, আশা করছি অল্প কিছু দিনের মধ্যে চলে আসবে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালট্যান্ট ডা. মাহবুবর রহমান মিলন বলেন, ইদানিং রোটা ভাইরাস ও শীত জনিত কারণে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগী বেশি। বিশেষ করে শিশুরা রোটা ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এর কোনো মেডিসিন না থাকার কারনে ৪ থেকে ৫ দিন শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত থাকছে। ৫ দিন পর ভাইরাস মারা গেলে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এর থেকে প্রতিকার পেতে শিশুদের বাসি খাবার খাওয়ানো যাবেনা। যতটা সম্ভব বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা ভাল। শিশুদের প্রতি বেশি যত্ন নিতে হবে। মোটা কাপড় পরিধান করাতে হবে। রাস্তার ধারের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি মানুষের সচেতনতা না বাড়লে ডায়রিয়া মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে। ১ দিন থেকে ৬ মাসের শিশুদের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ানো যাবে না। খিচুড়ি খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে। বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। যতটুকু সম্ভব বাচ্চাদেরকে সতর্ক রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *